তামাক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনে সংশোধনীর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের কোন বিকল্প নেই।
ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এর সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স-আত্মা আয়োাজিত ‘টেকসই উন্নয়নে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বিশেষজ্ঞ ও তামাকবিরোধী নেতৃবৃন্দ এই পরামর্শ প্রদান করেন। বৈঠকটি আজ সকালে অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বলা হয়, দেশে তামাক ব্যবহারের কারণে বছরে ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে এবং পঙ্গুত্ববরণ করে আরো কয়েক লক্ষ মানুষ। তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু এবং অসুস্থতা এসডিজি’র ৩য় লক্ষ্যমাত্রা- সুস্বাস্থ্য অর্জনের একটি বড় বাধা। বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারকারী পরিবারগুলোর মাসিক খরচের ৫ শতাংশ তামাক ব্যবহারে এবং ১০ শতাংশ তামাক ব্যবহারজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়। তামাক ব্যবহারের স্বাস্থ্য ব্যয় ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে তামাক ব্যবহারে দরিদ্র মানুষ, আরও দরিদ্র হয় পড়েছে, যা এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা-১ অর্জনে বড় বাধা।
আরো বলা হয়, তামাক চাষে ব্যবহৃত মোট জমি এবং উৎপাদিত তামাক পাতার পরিমাণ- এই দুই বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান যথাক্রমে ১৪তম এবং ১২তম। ক্রমবর্ধমান তামাকচাষের কারণে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই কৃষি (লক্ষ্যমাত্রা-২) ক্রমশঃ হুমকির মুখে পড়েছে। লিঙ্গ সমতা (লক্ষ্যমাত্রা-৫) টেকসই উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলেও বাংলাদেশে তামাক ব্যবহার না করেও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে বিপুল সংখ্যক নারী।
অনুষ্ঠানে আলোচকবৃন্দ বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনের প্রেক্ষাপটে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত খসড়া সংশোধনীর বিভিন্ন ধারা ভুলভাবে উপস্থাপন করে জনগণ, নীতিনির্ধারক এবং এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়কে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে কোম্পানিগুলো। কোম্পানির অপতৎপরতায় বিভ্রান্ত না হয়ে খসড়াটি দ্রুত চূড়ান্ত করার আহ্বান জানান তারা।
আলোচনা করেন, তামাক বিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, সিটিএফকে -বাংলাদেশ এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ,স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ, আত্মা’র কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন প্রমুখ।
আত্মা’র কো-কনভেনর নাদিরা কিরণের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন প্রজ্ঞা’র তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার। অনুষ্ঠানে প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়েরসহ বিভিন্ন তামাক বিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৪:০৬ ২০২ বার পঠিত