মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৩

দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিগুলোর ঐক্যের ওপর গুরত্বারোপ সরকারি দলের

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিগুলোর ঐক্যের ওপর গুরত্বারোপ সরকারি দলের
মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৩



দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিগুলোর ঐক্যের ওপর গুরত্বারোপ সরকারি দলের

সংসদ ভবন, ১০ জানুয়ারি, ২০২৩ : দেশকে নৈরাজ্য থেকে রক্ষা করতে এবং আগামী দিনে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখার লক্ষে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ইস্পাত কঠিন ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা।
আজ জাতীয় সংসদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৫১তম বার্ষিকী উপলক্ষে কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারায় সরকারি দলের সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান আনীত প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা এসব কথা বলেন। আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে সংসদে গৃহীত হয়। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আলোচনায় অংশ নেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, যারা এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানের নামে আন্দোলন করছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে জনগণকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া আর কিছুই করছে না। মুক্তিযুদ্ধের পর দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশের দায়িত্ব নিয়ে দেশকে যখন পূনর্গঠনের কাজে মনোনিবেশ করেন, তখন তাকে একাত্তরের পরাজিত শক্তি সপিরবারে হত্যা করে। দেশে অর্থনীতিকে পেছনের দিকে ধাবিত করে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশের দায়িত্ব নিয়ে উন্নয়ন অগ্রগতির পথে নিয়ে যাচ্ছেন, তখন স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বিএনপি-জামাত দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র করছে। এদেশের স্বাধীনতাকামী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়নের জয়যাত্রা চলমান রয়েছে তা এগিয়ে নিয়ে যাবে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু বিহীন বাংলাদেশ ও দেশের স্বাধীনতা এদেশের মানুষের কাছে ছিল অর্থহীন। ১৯৭২ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রিয় স্বদেশে ফিরে আসেন। এই দিনটি বাঙালি জাতির জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন, আনন্দের দিন। বঙ্গবন্ধুর ছিল হিমালয় সম ব্যক্তিত্ব, তাঁকে বিশ^ নেতারা সম্মানের চোখে দেখতেন।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত ছিলেন। পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারেনি, কিন্তু বাংলার মীরজাফররা তাঁকে হত্যা করে।
বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, পাকিস্তান থেকে ফিরে স্বদেশের মাটিতে পা রেখে বঙ্গবন্ধু পরিবারের কাছে না গিয়ে প্রথমে তাঁর জনগণের কাছে গিয়েছিলেন। এটিই ছিল বঙ্গবন্ধুর দেশের মানুষের প্রতি ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ। দেশের মানুষকে ভালবাসতেন বলেই দেশের মানুষকে বিশ^াস করতেন বলেই ফাঁসির কাস্টে যেতেও কুন্ঠা বোধ করেননি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ষড়যন্ত্র সম্পর্কে তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিতে গেলে তিনি বলেন-‘মতিয়া, মানুষের প্রতি বিশ^াস হারানো পাপ’। বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষকে অবিশ^াস করে পাপ করেননি, কিন্তু তাঁকে হত্যা করে আমরা পাপ করেছি।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে আসার পরই আমরা স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি। যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে যুদ্ধ ঝাঁপিয়ে পড়-এ কথা বলে বঙ্গবন্ধু যদি স্বাধীনতার ডাক না দিতেন তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে জিয়াউর রহমানের হাত রয়েছে।
এডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, পাকিস্তানীদের এজেন্ট হিসেবে জিয়া, ফারুক, রশিদ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যায়। দেশকে জামাত-বিএনপি প্রগতিশীল মানুষদের ওপর একাত্তরের মতো অত্যাচার নির্যাতন করেছে। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, তারাই আবার জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ঠেকানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। যদি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকে তাহলে কোন অপশক্তি দেশের উন্নয়নকে ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের পক্ষে সমর্থন চেয়ে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে এবং এখন উন্নত দেশে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি আগামী নির্বাচনে জনগণ তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) সর্বসম্মতিক্রমে ভোট দেবে। কারণ, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ হবে সমৃদ্ধশালী অর্থনীতির একটি দেশ।’
ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভ করলেও যতক্ষণ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে না আসেন, ততক্ষণ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অপূর্ণ থেকে যায়। তিনি ফিরে আসায় স্বাধীনতা পূর্ণতা পায়।
জাসদের সদস্য হাসানুল হক ইনু বলেন, পাকিস্তানীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার জন্য যে কবর খুঁড়ে ১৬ ডিসেম্বর সেই কবরে পাকিস্তানীরা পতিত হয়। ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি জাতির পিতাকে হত্যা করেছিল এবং পরাজিত শক্তির দোসররা এখনো বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলেছে।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার মীমাংসা ইস্যুতে বিএনপি-জামাত চক্র যেমন বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তেমনি দেশের অগ্রগতি নিরবচ্ছিন্ন করতে আমাদের স্বাধীনতাবিরোধীদের ধ্বংস করতে হবে।’
এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এবং বেগম রওশন আরা মান্নান।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৭:২৯   ১৮৫ বার পঠিত