মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে খালি কন্টেইনার থেকে উদ্ধার হওয়া কিশোরের পরিচয় পাওয়া গেছে। প্রথম পর্যায়ে এই কিশোরকে রোহিঙ্গা বলে ধারণা করা হলেও, শারীরিক প্রতিবন্ধী রাতুল (১৪) দুই মাস আগে বাড়ি থেকে হারিয়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
জানা গেছে, রাতুল কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার সাতপুকুরিয়া এলাকার দিনমজুর ফারুক মিয়া ছেলে। দিনমজুর ফারুকের ৩ ছেলে। রাতুল সবার বড়। অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চলে ফারুকের পরিবারের। আর্থিকভাবে দুর্বল হওয়ার কারণে ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পরও তিনি থানায় জিডি করতে পারেননি।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১২ জানুয়ারি ছেড়ে যাওয়া ‘এমভি ইন্টেগ্রা’ জাহাজের একটি খালি কনটেইনারে আটকা পড়ে রাতুল। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) মালেশিয়ার কেলাং বন্দরে জাহাজের একটি খালি কনটেইনারের ভেতর থেকে শব্দ শুনতে পান নাবিকরা। এরপরই কেলাং বন্দরকে জানানো হয়। পরদিন বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় জাহাজটি জেটিতে এনে কনটেইনার খুলে মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরকে উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) রাতুলের বাবা ফারুক মিয়া সময় সংবাদকে জানান, দুই মাস সাত দিন আগে বাসা থেকে বের হয় রাতুল। তারপর থেকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না রাতুলকে। সব আত্মীয়স্বজনের বাসায় খোঁজখবর নেয়া হয়। কিন্তু কোথাও খোঁজ মেলেনি রাতুলের। দুই মাস ধরে খোঁজ না পেয়ে অনেকটাই আশার প্রদীপ নিভে গিয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সময় সংবাদে প্রতিবেদন প্রচারের পর রাতুলকে দেখে চিনতে পারেন তারা।
নিখোঁজ সন্তানের সন্ধান পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশায় কান্নাকণ্ঠে রাতুলের মা রোকেয়া বেগম সময় সংবাদকে বলেন, ‘আমি আমার সন্তানের আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু সময় টিভিতে আমার ছেলেকে দেখে আমার সহ্য হচ্ছে না। আপনারা যেভাবে পারেন আমার ছেলেকে ফিরিয়ে এনে দেন। আমি সরকারের কাছে আকুল আবেদন করছি যেন সরকার আমার ছেলেকে আমার বুকে ফিরিয়ে দেয়।’
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং এলাকাবাসীর মধ্যে রাতুলকে ফিরে পেতে চরম আগ্রহ বিরাজ করছে। তাদের দাবি, যেন সরকার রাতুলকে মায়ের বুকে ফিরিয়ে দেয়।
রাতুল বর্তমানে মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:১৭:৩৩ ১৭২ বার পঠিত