তরুণদের মধ্যে সাম্প্র্রতিককালে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে মন্তব্য করে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, তরুণদের পারিবারিক মূল্যবোধ আর বাঙালিয়ানা চর্চায় জোর দিতে হবে। পাশাপাশি তাদের মধ্যে অতিরিক্ত প্রতিযোগিতার চাপ তৈরি না করে সময়ের সাথে নিজেকে গড়ে তোলার পরিবেশও করে দিতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।
আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার উদ্যোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫-প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লু’র মোহনা হলে আয়োজিত এ সংবর্ধনায় ১ হাজার ৫১১ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, ‘ইদানিং সামান্য কিছু হলেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যা করার একটা প্রবণতা বাড়ছে। আমাদের এটা নিয়ে ভাবতে হবে। তরুণদের জীবনবোধ শিক্ষা দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের বলতে চাই, আপনারা ফ্যামিলি ভ্যালু বোঝার চেষ্টা করবেন। মা-বাবার কথা ভাববেন। একজন সন্তানকে জন্ম দেয়া, বড় করা অনেক কষ্টের ব্যাপার। আপনারা যখন মা-বাবা হবেন তখন বুঝবেন। আর শুধু বইয়ে মুখ গুঁজে থাকলেও চলবে না। পরিপার্শ্বিকতা সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ওয়েস্টার্ন কালচার ফলো করার একটা প্রবণতা বাড়ছে। কিন্তু সেখানে ফ্যামিলি ভ্যালু আমাদের মত না। আমাদের একটা কালচারাল ঐতিহ্য আছে। আমরা সবই জানবো, অনুসরণও করবো। কিন্তু আমাদের যে বাঙালিয়ানা সেটাকে ধারণ করবো, চর্চা করবো। আজকে যারা জিপিএ ৫ পেয়েছেন তাদের সংবর্ধনা দেয়া হচ্ছে। এর মানে এই নয় যে যারা পায়নি তাদের দিয়ে কিছু হবে না। কারো সাথে তুলনা করে নিজের অবস্থান নিয়ে মন খারাপ করা যাবে না। ওর এটা আছে আমার কেন নেই- এভাবে ভাবা যাবে না। ভাবতে হবে আমার এমন হতে হবে, আমি সময়ের সাথে সাথে সেজন্য নিজেকে গড়ে তুলবে।’
মহানগর বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা সভাপতি সাজ্জাত হোসেনের সভাপতিত্বে এ সংবর্ধনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী ডেইজি সারোয়ার, চট্টগ্রাম জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, সংগঠনের উপদেষ্টা মো. ইমরান, জেলা শিল্পকলা একাডেমির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান জাহাঙ্গীর ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সদস্য আরিফুর রহমান, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য জাহেদুর রহমান সোহেল, প্রাক্তন ছাত্রনেতা একরাম চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাওয়াদ চৌধুরী।
তরুণদের স্মার্ট বাংলাদেশের দায়িত্ব নেয়ার কথা মাথায় রেখে নিজেদের গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যতের বাংলাদেশ নিয়ে আমরা এখন কথা বলছি। এক সময় তো এই ভাবনাটা ছিল না। আমরা শুধু অতীত আর বর্তমান নিয়ে ভাবতাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়ে প্রথমবার আমাদের মাথায় এমন ভাবনা তৈরি করেছেন। সেটা সফলও হয়েছে। এখন তিনি বলছেন, ২০৪১ সালে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ হবো। সে বাংলাদেশের দায়িত্ব তোমাদের নিতে হবে। নিজেদের সেভাবে গড়ে তুলতে হবে। ভিশন নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে।’
আরো উপস্থিত ছিলেন কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সোলায়মান, ইউপি চেয়ারম্যান কাইয়ুুম শাহ, এডভোকেট প্রকৃতি চৌধুরী ছোটন, আতাউর রহমান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জায়িদ বিন কাশেম।
সংবর্ধিত কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন মুমতাহিনা তাবাসসুম মালিহা।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫০:৪৬ ১৯৮ বার পঠিত