বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

সরিষাবাড়ীতে বালু খেকোদের আদরে জিম্মি প্রশাসন

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » সরিষাবাড়ীতে বালু খেকোদের আদরে জিম্মি প্রশাসন
বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩



সরিষাবাড়ীতে বালু খেকোদের আদরে জিম্মি প্রশাসন

ইসমাইল হোসেন জেলা প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী যমুনা নদী। এ নদীর খরস্রোতা প্রভাবে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয় শত শত বসতভিটা ও ফসলি জমি। তাই নদী ভাঙ্গনরোধে সরকারিভাবে নানা পদক্ষেপ নিলেও এর কোন প্রতিকার বা উপকার পাচ্ছে না নদীর তীরে বসবাসরত অসহায় মানুষেরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার পোগলদিঘা, আওনা ও পিংনা ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীর ভূগর্ভস্থ হতে কিছু অসাধু বালুখেকো ৮ হতে ১০টি অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করছে মাসের পর মাস। এতে করে নদী শাসনের ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে এবং সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেরিবাঁধ ভাঙ্গনের তোড়ে পড়ছে। এছাড়াও ফসলি জমিসহ হুমকির মূর্খে পড়ছে নদীর তীরে বসবাসরত অসহায় পরিবারগুলো।

নদীর তীরে বসবাসরত কৃষক আব্দুস সালামের সাথে কথা বলে জানা যায়, একসময় তাদের কৃষি জমিগুলো নদীগর্ভে ছিল। আজ জমির আংশিক জেগে উঠায় তারা বোরো ধান ও ভুট্টা চাষ করছে। কিন্তু অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ীদের কারণে পুনরায় আবাদি জমিগুলো ভাঙ্গনের মুখে পড়ছে এবং তাদের উত্তোলনকৃত বালু মজুদ করে রাখার ফলে ঠিকমত চাষাবাদ করতে পারছেন না বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত একই স্থানে ৮/১০টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দিনরাত ভর বালু উত্তোলন করছে বালু খেকোরা। প্রতিদিন সেই বালু ট্রাক ও ট্রাক্টর দিয়ে শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করে আসছে তারা। এতে করে তারা লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে বলেও এর কোন সঠিক সমাধান বা প্রতিকার তারা পাইনি বলে অভিযোগ করেন।

তবে তিনি এটাও বলেন, মাঝেমধ্যে প্রশাসন এসে ড্রেজার মেশিনগুলো পুড়ে বা ভেঙে দিয়ে যায়। কিন্তু বালুখেকোরা তৎক্ষণাৎ মেরামত করে পূর্বের ন্যায় বালু উত্তোলন করা শুরু করে। তাই প্রশাসনের কাছে তাদের দাবি স্থায়ীভাবে যেন এ অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়।

এদিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তারাকান্দি,জেডিঘাট ও কুলপাল এলাকায় যে বালু মহলের অঙ্গরাজ্য গড়ে উঠেছে তা নিয়ন্ত্রণ করছেন আব্দুর রহিম, মুকুল মাস্টার, ফরহাদ ও মন্ডল। তারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পেশীশক্তির প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন যাবত এ বালু বাণিজ্য করে আসছে। বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে কেউ প্রতিবাদ করলে তার ওপর অসহ্য নির্যাতন করা হয় বলে অনেকেই নাম না প্রকাশে অভিযোগ করেন।

এদিকে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়টি একাধিকবার সাংবাদিক মহল বন্ধের দাবি জানালেও প্রশাসনিকভাবে এর কোন সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অনেকেই দুঃখ প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে ড্রেজার মেশিন ধ্বংস সহ জরিমানা করা হয়েছে এবং এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪২:৩৭   ৩০১ বার পঠিত