একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে হত্যা, নির্যাতন, অপহরণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সুলতান মাহমুদ ফকিরকে (৬৪) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের বিয়াতা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে র্যাব-১৪-এর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। পরের দিন সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আকুয়া বাইপাস র্যাব-১৪ কার্যালয়ে অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মহিবুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেসব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানান।
অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মহিবুল ইসলাম খান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সহযোগী রাজাকার সুলতান মাহমুদ ফকির ইউনুছ আলীকে ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায় । এ বিষয়ে ১৯১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ইউনুছ আলীর ছেলে ৯ জনকে আসামি করে ময়মনসিংহ বিচারিক আদালতে মামলা করেন। মামলাটি ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা হয়। আসামি ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।’
‘এই মামলায় অভিযুক্ত তিনজন আসামি রায়ের পূর্বে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করে। গত ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ সালে মো. সুলতান মাহমুদ ফকিরসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। এছাড়াও সুলতান মাহমুদ ফকির ত্রিশালের কানিহারি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড, বিয়ারতা গ্রামের নিয়ামত আলী, আজিজুর রহমান, আব্দুল মতিনকে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে অমানবিক নির্যাতনের দায়ে ৭ বছর কারাদণ্ড, কালীবাজার এলাকায় সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর ধর্ষণ ও অমানবিক নির্যাতন সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের দায়ে পৃথকভাবে আরো ১৪ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয় ।’
‘১৯৭১ সালে সুলতান মাহমুদ ফকির রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেয়, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হয়ে কাজ করে। সে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়ে ত্রিশালে রাজাকার বাহিনী গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দণ্ডিত হওয়ার পর সে নিয়মিত অবস্থান পরিবর্তন করতো এবং কোনো মোবাইল ফোন ব্যবহার করতো না। তার পরিচয় প্রকাশ পায় এমন কোনো অনুষ্ঠানে নিজেকে প্রকাশ করতো না।’
‘গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।’
বাংলাদেশ সময়: ১৭:১৭:১০ ১৭৬ বার পঠিত