মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বাংলাদেশ এখন এশিয়ার ষষ্ঠ দ্রুত সম্প্রসারণশীল অর্থনৈতিক শক্তি

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » বাংলাদেশ এখন এশিয়ার ষষ্ঠ দ্রুত সম্প্রসারণশীল অর্থনৈতিক শক্তি
মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩



বাংলাদেশ এখন এশিয়ার ষষ্ঠ দ্রুত সম্প্রসারণশীল অর্থনৈতিক শক্তি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন এশিয়ার ষষ্ঠ দ্রুত সম্প্রসারণশীল অর্থনৈতিক শক্তি এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।
আজ সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা বলেন, “আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরিসংখ্যান অনুসারে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে বাংলাদেশ এখন এশিয়ার ষষ্ঠ দ্রুত সম্প্রসারণশীল অর্থনৈতিক শক্তি এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে শীর্ষ দ্রুত সম্প্রসারণশীল অর্থনৈতিক শক্তি। এমনকি বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনৈতিক দেশ এবং প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০৩০ সালের মধ্যে এটি হবে ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতি।”
গত ৫ জানুয়ারি সংবিধান অনুযায়ি বছরের প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিনে সংসদে রাষ্ট্রপতি এ ভাষণ দেন। রীতি অনুযায়ি এ ভাষণ সম্পর্কে চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এ প্রস্তাবটি সমর্থন করেন সরকারি দলের সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার।
ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনার ২০তম দিনে আজ অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সরকারি দলের সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার, কাজী নাবিল আহমেদ, আনোয়ার হোসেন খাঁন, আতিউর রহমান আতিক, মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ, ছোট মনির, জাতীয় পার্টির সদস্য মো. মুজিবুল হক, কাজী ফিরোজ রশীদ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও ফখরুল ইমাম, বেগম নাজমা আক্তার।
তারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী, যোগাযোগ, আর্থ-সামাজিক, শিক্ষা, যুব ও ক্রীড়া, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি)সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, গত ৪ বছরে সরকারি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হাসপাতালে ৩০ হাজার শয্যা বাড়ানো হয়েছে। শয্যা সংখ্যা পঙ্গু হাসপাতালে ৫শ’ থেকে ১ হাজার শয্যায় উন্নীত হয়েছে, মানসিক হাসপাতালে ২শ’ থেকে ৪শ’ শয্যায় উন্নীত হয়েছে, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে সাড়ে ৮শ’ থেকে সাড়ে ১৩শ’ শয্যায় উন্নীত হয়েছে, হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ৪শ’ শয্যা থেকে সাড়ে ১৩শ শয্যায় উন্নীত হয়েছে, নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে সাড়ে ৪শ’ শয্যা ছিল, সেখানে আরও সাড়ে ৫শ’ শয্যা বাড়ানোর কাজ চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মাত্র ৩শ’ আইসিইউ ছিল এখন ১ হাজার ৪৪৪টি আইসিইউ শয্যা স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি জেলা হাসপাতালের জন্য ১০ শয্যা আইসিইউ এবং ১০ শয্যা ডায়ালেসিস চালু করার কাজ চলমান রয়েছে। গত ৪ বছরের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ৫শ’ এম্বুলেন্স দেয়া হয়েছে।
বিএনপির ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকার তাদের শাসনামলে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম স্থগিত করেছিল অথচ এসব কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ১০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছে। বর্তমান সরকার বিগত ৪ বছরে আরও ৭শ’ কমিউনিটি সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক বলেন, “বিএনপি ঘোলা জলে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে, কারণ তারা কখনও সত্য বলে না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে তারা সব সময় মিথ্যাচার করে। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণে ‘বীরের মুখে বীর গাঁথা’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা তাদের মুখে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা বলবেন এবং এগুলো সংরক্ষণ করে পরে পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করা হবে।
পাঠ্যপুস্তকের শিক্ষা কারিকুলাম প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি বলেন, “একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমাদের পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং এই চিহ্নিত মহল আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য জঘন্য ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।” তিনি বলেন, সরকার চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী করে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী তার বক্তব্যে বলেন, বিশ্বব্যাংকের অসহযোগিতা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার যোগাযোগ খাতে বিস্ময়কর উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে।
সরকারকে অর্থনৈতিক নীতিতে রদবদল করার আহ্বান জানিয়ে চট্টগ্রাম-৫ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, সরকারের উচিত আইএমএফের পরামর্শ বাস্তবায়ন না করে অর্থনৈতিক খাতে কিছু সংস্কার করা, কারণ আইএমএফের পরামর্শ বাস্তবায়নের ফলে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
সরকারের সাফল্যের বিস্তারিত তুলে ধরে দেশকে শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করার জন্য সময়োপযোগী ভাষণ দেয়ার জন্য সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে তারা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের জন্য গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫৮:৫৭   ১৫৫ বার পঠিত