বাংলাদেশের নবনির্বাচিত ২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অভিনন্দন জানিয়েছে জাতিসংঘ। মঙ্গলবার বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ অভিনন্দন জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে তার নতুন দায়িত্ব গ্রহণে সাফল্য কামনা করি। পাশাপাশি তাকে বাংলাদেশ সরকারের নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত করার জন্য বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানাই।
আরও বলা হয়, আমরা আশা করি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং জাতিসংঘ সনদ বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি অর্জনে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্ব ব্যাপ্তি লাভ করবে।
এর আগে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের নামে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন- ইসি।
গেজেটে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ২৭নং আইন) এর ধারা ৭ এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বিধিমালা, ১৯৯১ এর বিধি ১২ এর উপ-বিধি (৬) অনুসারে নির্বাচনী কর্তা ও নির্বাচন কমিশনার এর ঘোষণা মোতাবেক মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার- সিইসি হাবিবুল আউয়াল সোমবার দুপুরে নির্বাচন ভবনে মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে মো. সাহাবুদ্দিনকে দেশের নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা দেন। দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি থাকবেন মো. সাহাবুদ্দিন।
বর্তমান রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ আগামী ২৩ এপ্রিল অবসরে যাবেন। পরদিন ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করতে পারবেন মো. সাহাবুদ্দিন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৪৯ সালে পাবনা শহরের জুবিলি ট্যাঙ্কপাড়ায় (শিবরামপুর) জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শরফুদ্দিন আনছারী ও মাতা খায়রুন্নেসা। তিনি পাবনা শহরের পূর্বতন গান্ধি বালিকা বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করে রাধানগর মজুমদার একাডেমিতে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন।
১৯৬৬ সালে এসএসসি পাস করার পর পাবনার এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ১৯৬৮ সালে এইচএসসি ও ১৯৭১ সালে (অনুষ্ঠিত ১৯৭২ সালে) বিএসসি পাস করেন। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ সালে মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং পাবনা শহিদ অ্যাডভোকেট আমিনুদ্দিন আইন কলেজ থেকে ১৯৭৫ সালে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।
ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মো. সাহাবুদ্দিন মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী। পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হিসেবে তিনি আইন পেশায় যোগ দেন এবং ১৯৮২ সাল পর্যন্ত এই পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। পরে ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।
২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মো. সাহাবুদ্দিন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের অন্যতম কাণ্ডারি হিসেবে পরিচিত মো. সাহাবুদ্দিন পাবনা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতিও।
মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে পরপর দুইবার বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব নির্বাচিত হন। পেশাগত জীবনে প্রথম দিকে সাংবাদিকতাও করেছেন। তিনি পাবনা প্রেসক্লাব ও অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির আজীবন সদস্য।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৯:৫৮ ১৮২ বার পঠিত