ডায়াবেটিস যেন জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। তিনি বলেন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। ডায়াবেটিক রোগীদের কল্যাণে সরকার ডায়াবেটিস হাসপাতাল নির্মাণে সহযোগিতা করছে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে বারডেম অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ডায়াবেটিস নীরব মহামারি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ রোগ অন্যান্য রোগের কারণ। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির কার্যক্রমের কারণে এ রোগ বিষয়ে দেশে সচেতনতা বেড়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় ডায়াবেটিক সমিতিকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশেই এখন সকল রোগের চিকিৎসার সুবিধা রয়েছে। ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য জটিল রোগের চিকিৎসা সহজলভ্য হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান। তিনি বলেন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেয়ে না রাখাটা বেশি ব্যয়বহুল। বাস্তবতা হলো বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখাটা ব্যয়বহুল, তবে না রাখাটা তার চেয়েও ব্যয়বহুল। সুতরাং ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
এসময় ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ধর্মীয় নেতাদের মাধ্যমে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানান অধ্যাপক ডা. আজাদ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী সবার ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও সতর্ক করেন সমিতির সভাপতি।
তিনি বলেন, দেশে ডায়াবেটিস রোগীর সমপরিমাণ প্রি-ডায়াবেটিস রোগী আছে, যা রীতিমতো আশঙ্কাজনক। এমন পরিস্থিতিতে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফ উদ্দিন ও বারডেমের মহাপরিচালক অধ্যাপক এমকেআই কাইয়ুম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে আদর্শ ডায়াবেটিক রোগীদের মধ্যে অভিনন্দনপত্র ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এবারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল, ‘ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সর্বক্ষণ; সুস্থ দেহ, সুস্থ মন’।
বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্রতিবারের মতো এবারও পালিত হয়েছে ‘ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস’ ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ডায়াবেটিস রোগ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে আজ সকাল থেকে নানা কর্মসূচি হাতে নেয় ডায়াবেটিক সমিতি।
আলোচনা সভা ছাড়াও অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকাল সাড়ে ৮টায় বারডেম কার পার্কিংয়ের নীচ থেকে টেনিস ক্লাবের গেট পর্যন্ত সচেতনতামূলক স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান, সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বারডেম ক্যাম্পাস এবং এনএইচএন ও বিআইএইচএস’র বিভিন্ন কেন্দ্র সংলগ্ন স্থানে বিনামূল্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষা।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে ‘কান্তি’র বিশেষ প্রকাশনা, সচেতনতামূলক পোস্টার ও লিফলেট প্রকাশ ও বিতরণ করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে মূল্যহ্রাসে হার্ট ক্যাম্পের আয়োজন করে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল। সমিতির অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৫৬ সালের এই দিনে জাতীয় অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিমসহ কয়েকজন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তির উদ্যোগে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২৯:২৮ ১৬০ বার পঠিত