সুজন মাহমুদ যশোর প্রতিনিধি : যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানাধীন গদখালী সাকিনস্থ মোঃ জসিম উদ্দিন এর পুত্র রাশেদ উদ্দিন(২৫) পেশায় একজন ইজিবাইক চালক। রাশেদ উদ্দিন প্রতিদিনের ন্যায় গত ০২/০৩/২০২৩ ইং সকাল অনুমান ৭.সময় নিজ বাড়ী থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়। পরদিন ০৩/০৩/২০২৩ ইং সকাল ১১টার সময় অভয়নগর থানাধীন ধোপাদী সাকিনস্থ উলুরবটতলা টু মশরহাটিগামী সলিং রাস্তার পার্শ্বে জনৈক আজিজুরের মৎস্য ঘের থেকে রাশেদের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে যশোর জেলার অভয়নগর থানার মামলা নং-০২, তারিখ-০৩/০৩/২০২৩ ইং, ধারা-৩০২/৩৭৯/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।
উক্ত মামলাটি পিবিআই, যশোর জেলা স্ব-উদ্দ্যোগে গ্রহণ করে মামলার তদন্তভার এসআই (নিঃ) ডিএম নুর জামাল হোসেন এর উপর অর্পণ করা হয়। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর সঠিক দিক নির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) দেবাশীষ মন্ডল, সঙ্গীয় এসআই(নিঃ) স্নেহাশিস দাশ, এসআই(নিঃ) ডিএম নুর জামাল হোসেন ও এসআই(নিঃ) রতন মিয়াসহ যশোর জেলার চৌকস দল কর্তৃক গত ০৪/০৩/২০২৩ ইং দুপুর ১২.৩৫ মিনিটে সময় আসামী ০১। জান্নাত আক্তার আয়েশা (২২), পিতা- মজিবর রহমান, সাং-পারবাজার, থানা-ঝিকরগাছা, জেলা- যশোর, ০২। মোঃ মেহেদী হাসান মিলন (২৩), পিতা- মৃত নিজাম উদ্দিন মোল্যা, সাং- বারভাগ, থানা-বাঘারপাড়া, জেলা-যশোর গ্রেফতার করা হয়। আসামী ০৩। মোঃ রিমন বিশ্বাস বাবু (২২), পিতা- কলিম বিশ্বাস, সাং-কোটা অভয়নগর থানা-অভয়নগর, জেলা-যশোরকে যশোর জেলা ডিবির সহযোগীতায় গ্রেফতার করা হয়। আসামী মেহেদী হাসান মিলন এর হেফাজত থেকে ভিকটিম মৃত রাশেদ উদ্দিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।
আসামী ০১। মোঃ মেহেদী হাসান মিলন, ০২। মোঃ রিমন বিশ্বাস বাবু ও ০৩। আসামী জান্নাত আক্তার আয়েশা সংঘবদ্ধ ইজিবাইক ছিনতাই ও অজ্ঞান পার্টির সদস্য। তারা যশোর জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় ইজিবাইক ও ভ্যান ছিনতাই করে পরস্পর যোগসাজসে ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে। আসামীরা ভিকটিম রাসেদকে হত্যা করে তার ইজিবাইক ছিনতাই করবে বলে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনানুযায়ী আসামীরা ভিকটিম রাশেদের ইজিবাইকটি রিজার্ভ ভাড়া করে এবং আসামী মেহেদী হাসান মিলন ও জান্নাত আকতার আয়েশা রাশেদ উদ্দিনের ইজিবাইকে চড়ে প্রথমে রাজগঞ্জ ঝাঁপা বাওড় এলাকায় বেড়াতে যায়। ঝাঁপা বাওড়ে থাকা ভাসমান ব্রীজে তারা কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে। একপর্যায়ে ইজিবাইক নিয়ে যশোর জেলার অভয়নগর থানাধীন ধোপাদী সাকিনস্থ উলুর বটতলা হতে মশরহাটিগামী ইটের সলিং রাস্তার ডান পাশের পৌছালে আসামী মেহেদী হাসান মিলন ইজিবাইক থামিয়ে নিজের পরনে থাকা রাবারের বেল্ট খুলে ভিকটিম রাশেদের গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে এবং রাশেদের মৃতদেহ ঘটনাস্থলের পাশে থাকা জনৈক মোঃ আজিজুর রহমান সরদার এর মৎস্য ঘেরের পানির মধ্যে ফেলে দেয়। তারপর আসামীরা ভিকটিমের ইজিবাইক রাজারহাট এলাকায় এনে আসামী মিলনের বন্ধুর নিকট বিক্রয় করে দেয়। আসামীরা রাশেদ উদ্দিন হত্যাকান্ডের সহিত জড়িত মর্মে স্বীকার করে। মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতারের জন্য পিবিআই যশোর জেলা, যশোর ডিবি, ও RAB যশোর একত্রে কাজ করে। উল্লেখ্য যে, ইতিপূর্বে আসামী মোঃ মেহেদী হাসান মিলনকে শার্শা থানার মামলা নং-১৮, তারিখ-১৮/০১/২০২২ ইং, ধারা-৩০২/২০১ পেনাল কোড মামলায় ভিকটিমকে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গ্রেফতারপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে সে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। আসামী ০১। মোঃ মেহেদী হাসান মিলন, ০২। আসামী জান্নাত আক্তার আয়েশা ও ০৩। মোঃ রিমন বিশ্বাস বাবুদের অদ্য ০৫/০৩/২০২৩ ইং পলাশ কুমার দালাল, বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমলী আদালত কোতয়ালী, যশোর আদালতে সোপর্দ করা হয়। আসামী মোঃ মেহেদী হাসান মিলন ও জান্নাত আক্তার আয়েশাদ্বয় বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামী গ্রেফতার এবং লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারের প্রচেষ্টাসহ মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩০:১৪ ১৬৫ বার পঠিত