কাতার বিশ্বকাপে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের সমর্থনের কথা এখন বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। লিওনেল মেসিদের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের অফুরন্ত সমর্থনের ফলে দুই দেশের সম্পর্কে বেশ উন্নতিও হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আলাদা একটা টান অনুভব করেন আর্জেন্টাইনরা।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে গতকাল বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্টে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছে আর্জেন্টিনার জাতীয় কাবাডি দল। এসেই এদেশের মানুষকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন আর্জেন্টিনা কাবাডি দলের কোচ রিকার্দো আকুনিয়া।
প্রথমবার বাংলাদেশে এসে আর্জেন্টিনা কাবাডি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জাতীয় দলের কোচ আকুনিয়া জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মানুষের অনুভূতি একই রকম, বিশেষ করে কাতার বিশ্বকাপের সময় বাংলাদেশের মানুষ আর্জেন্টিনার প্রতি উৎসাহ দেখিয়েছে, টিভিতে আর্জেন্টাইনরা দেখেছে। আমরা অভিভূত। বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মানুষ ভাই-ভাই।
কাবাডির প্রেমে পড়ার আগে ৫৫ বছর বয়সী রিকার্দো আকুনিয়া তরুণ বয়সে ব্যাডমিন্টন খেলতেন। ব্যাডমিন্টন খেলতে বিশ্বের ৪০টি দেশ ভ্রমন করেছেন তিনি। এবার যুক্ত হলো বাংলাদেশও। আগামী ১৩ মার্চ থেকে শুরু হতে যাওয়া ১২ দলের বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্টের তৃতীয় আসরে খেলবে লে আলবিসেলেস্তেরা।
আর্জেন্টিনায় সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। কাতার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর উন্মাদনা আরও বেড়ে গেছে। বিশেষ করে তরুণরা ফুটবলের প্রতি আরও বেশি বুদ হয়েছে। তবে আর্জেন্টাইনরা খেলাধুলার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একটা খেলা খেলে না, একাধিক খেলা খেলে।
কাবাডি আর্জেন্টিনার ছোট খেলাগুলোর মধ্যে একটা। ২০০২ সালে কানাডায় ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের খেলতে দেখে কাবাডির প্রতি আগ্রহ জন্মায় রিকার্দো আকুনিয়ার। সেখানে খেলার নিয়ম-কানুন শিখে নিজ দেশে চর্চা শুরু করেন। এখন পর্যন্ত আর্জেন্টিনায় মোট ৬টি দল গড়েছেন তিনি, সবই অপেশাদার। নিয়মিত কোনো লিগ না হলেও, বছরে দুটি টুর্নামেন্ট হয়।
বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্ট খেলতে আসা দলের মধ্যে চারজন পুরনো, যারা ২০১৬ সালে ভারতের আহমেদাবাদে বিশ্বকাপ খেলেছেন। দলে তিন জন রয়েছেন কুস্তিগীর, দুজন দ্বিতীয় বিভাগে ফুটবল খেলেন; আছেন রাগবি, ব্যাডমিন্টন ও তায়কোয়ানদো খেলোয়াড়ও।
আকুনিয়ার সঙ্গে কথায় কথায় উঠে আসে দিয়েগো ম্যারাডোনা প্রসঙ্গ। কিংবদন্তি এই ফুটবলারের সঙ্গে দুইবার দেখা হয়েছে আকুনিয়ার। প্রথমবার ১৯৯৪ সালে যুক্তরাস্ট্র বিশ্বকাপে ডোপিং টেস্টে পজিটিভ হয়ে নিষিদ্ধ হয়ে দেশে ফেরার পর একটি ব্যাডমিন্টন কোর্টে।
বুয়েন্স আয়ার্স থেকে ব্রাজিল হয়ে দুবাই, এরপর ঢাকা- সব মিলিয়ে ৪৮ ঘন্টা বিমানপথ ভ্রমন করে খেলোয়াড়রা। সন্ধ্যায় বাংলাদেশের কাবাডি কোর্ট দেখতে যান তিনি।রিকোর্দো এসেছেন পাতাগোনিয়া শহর থেকে, যেটি বুয়েন্স আয়ার্স থেকে ২৩০০ কিলোমিটার দূরে। দুই দিন বাস জার্নি করে কাবাডি দলের সাথে যোগ দিয়ে ঢাকা এসেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:১৪:৫৩ ১৬৭ বার পঠিত #আর্জেন্টিনা #ভাই #মানুষ #‘বাংলাদেশ