শেষ ষোলর দ্বিতীয় লেগে গোলশুন্য ড্র করে দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে পর্তুগালের ক্লাব পোর্তোকে বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলান।
ইতালিয়ান দলটি তিনবার ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০১১ সালের পর প্রথমবারের মত তারা শেষ আট নিশ্চিত করলো।
২০০৬ সালের পর ইতালিয়ান দুই জায়ান্ট ইন্টার ও এসি মিলান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো।
শেষ ষোলর প্রথম লেগে রোমেলু লুকাকুর শেষ মুহূর্তের গোলে ইন্টারের জয় নিশ্চিত হয়েছিল। কিন্তু কাল পোর্তোর মাঠ এস্তাদিও ডো ড্রাগাওতে নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি ইতালিয়ান ক্লাবটি। বরং তাদের তুলনায় স্বাগতিক পোর্তোই কাল ভাল খেলেছে। যদিও ইন্টার গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানাকে খুব কমই পরীক্ষায় ফেলতে পেরেছে। শেষ পাঁচবারের প্রচেষ্টয় এনিয়ে তৃতীয়বারের শেষ আটে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো ইন্টার।
ম্যাচের একেবারে শেষভাগে স্টপেজ টাইমে পোর্তোর গোলের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি এসেছিল। কিন্তু মেহদি টারেমি ও মার্কো গ্রুজিস উভয়েই বল পোস্টে লাগান। মারকানোর শট লাইনের উপর থেকে ক্লিয়ার করা হয়।
ইন্টার মিডফিল্ডার হাকান কাহানগ্লু বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে অনেকেই আবেগী হয়ে উঠেছে। অনেক বছর পর আমরা এই কৃতিত্ব অর্জন করলাম। আমরা কিছু ভুল করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয় ধরে রাখতে পেরেছি। বিষয়টা সত্যিই কঠিন ছিল। এজন্য আমি পুরো দলকে অভিনন্দন জানাতে চাই।’
ঘরোয়া ফর্ম নিয়ে ইন্টার বর্তমানে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছে। কিন্তু কাহানগ্লু মনে করেন কালকের ম্যাচটি সকলকে মানসিক ভাবে চাঙ্গা করে তুলবে, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। এই ম্যাচটি আমাদের আত্মবিশ^াস যোগাবে। গোল করতে না পারলেও শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি।’
ইন্টার কোচ সিমোনে ইনজাগি ঘরের বাইরে এ্যাওয়ে ম্যাচগুলোতে দলের হতাশাজনক পারফরমেন্স থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষ্যস্থির করেছিলেন। আক্রমনভাগে তিনি মূল একাদশে খেলিয়েছেন এডিন জেকো ও লটারো মার্টিনেজকে। বদলী বেঞ্চে ছিলেন প্রথম লেগের ম্যাচজয়ী তারকা রোমেলু লুকাকু। ইতালিয়ান দলের বিপক্ষে সাম্প্রতিক কালে পোর্তোর বেশ ভাল রেকর্ড রয়েছে। সম্প্রতি তারা জুভেন্টাস ও রোমাকে বিদায় করেছে। কিন্তু ১৮০ মিনিট ইন্টারের বিরুদ্ধে পর্তুগীজ চ্যাম্পিয়নরা কোন গোল করতে পারেনি।
শেষ মুহূর্তে ইনজুরিতে পড়ায় ৪০ বছর বয়ষী অভিজ্ঞ সেন্টার-ব্যাক পেপেকে দলে নিতে পারেনি পোর্তো। সান সিরোতে লাল কার্ড পাওয়ায় ওটাভিও কাল দলে ছিলেন না। ম্যাচের শুরুতে মাথিয়াস উরিবের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে গেলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি পোর্তোর। জেকো ও নিকোলো বারেলার দুটি শট দারুন দক্ষতায় রুখে দেন পোর্তো গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তা। বিরতির ঠিক আগে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার পেপের ক্রস থেকে ইউস্তাকুইও বল ধরতে না পারায় পোর্তোর সহজ গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছে।
বিরতির পরেও পোর্তো বেশ কিছু আক্রমন করেছে। লো ড্রাইভে গুচিজ আন্দ্রে ওনানাকে পরীক্ষায় ফেলেছিলেন। গালেনোর শট রুখে দিয়ে ইন্টারকে রক্ষা করেন ওনানা। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন আলেহান্দ্রো বাস্তোনি। ইনজুরি কাটিয়ে ম্যাচের শেষভাগে ইনজাগির দলে ফিরেছেন মিলান স্ক্রিনিয়ার। স্টপেজ টাইমে মারাকানোর শট লাইনের উপর থেকে
ক্লিয়ার করেন ডেনজেল ডামফ্রাইস। শেষ ভাগে টারেমির হেড পোস্টে লেগে ফেরত আসে, গ্রুজিচের শট ক্রসবারের জন্য জালে জড়ায়নি। ইনজুরি টাইমের সপ্তম মিনিটে পেপে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ত্যাগ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫৪:৩৭ ১৭২ বার পঠিত