চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছর ২৩ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। চলবে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত। এই পুরো একটা মাস পালিত হবে রোজা। এই সময় সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত মুসলমান ধর্মালম্বীরা না খেয়ে কাটান। সন্ধাবেলায় কিছু খেয়ে ইফতার করেন।
সারাবিশ্ব জুড়েই মুসলমানরা এই মাসটিকে পবিত্র হিসেবে মেনে চলেন। সব ধর্মীয় রীতি-নীতি মেনেই পালিত হয় মাসটি। থাকে ধর্মীয় সম্প্রীতির উদাহরণও।
ধর্মীয় মতে, এই মাসের বিরাট ফজিলত তো রয়েছেই। পাশাপাশি বিজ্ঞানও কিন্তু না খেয়ে থাকার গুণ সম্পর্কে ইতিবাচক কথাই বলছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের কথায়, না খেয়ে থাকার কিছু শারীরিক উপকার রয়েছে। শরীর ও মন সুস্থ থাকে এর মাধ্যমে। আসুন জানা যাক রমজানে না খেয়ে থাকার উপকারিতা।
১. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনেই বাড়েছে। রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এই না খেয়ে থাকা। বেশকিছু গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য। এক্ষেত্রে না খেয়ে থাকলে ইনসুলিনের কার্যকারিতে বাড়ে। ফলে কমে ইনসুলিন রেজিস্টেন্স। তাই যাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি, তারা রোজা রাখলে উপকার পেতেই পারেন।
তবে যাদের ইতোমধ্যেই ডায়াবেটিস রয়েছে, সুগারের ওষুধ খান, তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার পরই রমজান পালন করুন।
২. প্রদাহের সঙ্গে লড়াই করে
ইনফেকশনের সঙ্গে লড়াই করার সময় শরীরে তৈরি হয় প্রদাহ। তবে অনেকের দেহে অহেতুক প্রদাহ হয়। হার্টের রোগ, ক্যানসার, রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস থাকলে প্রদাহের আশঙ্কা বেশি। দেখা গেছে, নিয়মিত ফাস্টিং করলে আদতে প্রদাহের আশঙ্কা কমে। আর এই তথ্য মিলেছে বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে। তাই প্রদাহ কমাতে চাইলে রমজান মাস আপনার কাছে হাতিয়ার হয়ে উঠতেই পারে।
৩. প্রেশার, কোলেস্টেরল থাকে নিয়ন্ত্রণে
পুরো পৃথিবীর মৃত্যুর পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে একটা জিনিস পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, হার্টের রোগ বা কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজে আক্রান্ত হয়েই প্রাণ হারান সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ। এক্ষেত্রে হাই ব্লাড প্রেশার, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডস কিন্তু সমস্যার মূল কারণ। দেখা গেছে নিয়মিত না খেয়ে থাকলে কমতে পারে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডস, হাই ব্লাড প্রেশার।
৪. মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায়
মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে পারলে দুনিয়া থাকবে আপনার হাতের মুঠোয়। সব জায়গাতেই পাবেন সমাদর। আর এই লক্ষ্যে পৌঁছে যেতেও আপনাকে সাহায্য করতে পারে পবিত্র রমজান মাস। দেখা গেছে, যে না খেয়ে থাকলে ব্রেনের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। এমনকী ব্রেন নিজের কাজ ঠিকমতো করতে পারে। এ ছাড়াও ব্রেনের গঠনগত পরিবর্তন হয় ফাস্টিং করলে। তাই ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে এই সময়টাকে কাজে লাগাতেই পারেন।
৫. ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে
ওজন বেশি থাকা নিয়ে সারা বছর অভিযোগ করে থাকেন নিশ্চয়ই। তবে এখন আপনার হাতে রয়েছে এক বড় সুযোগ। রমজান মাস পালন করে ফেললেই ফল পাবেন হাতেনাতে। এই সময়ে প্রতিদিন না খেয়ে থাকার কারণে শরীরে ক্যালোরির ঘাটতি হবে। ফলে ফ্যাট পুড়বে দ্রুত গতিতে। ওজন কমবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন পবিত্র রমজান মাস আপনাকে শারীরিকভাবে কতটা চাঙা করতে পারে!
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।