চট্টগ্রাম মহানগরীতে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অবজারভেশনাল স্টাডি কাজে লাগাবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)।
আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের একটি হোটেলে আয়োজিত এক কর্মশালায় চসিক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন এন্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) ও ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের সহায়তায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং জন্স হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিট যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
চসিক মেয়র অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত কমাতে প্রয়োজন আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং অবাকাঠামোর সার্বিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রয়োজন। কেবল আইন বা শাস্তি দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব নয়। এজন্য আমাদের গবেষণাভিত্তিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং বিদ্যমান অবকাঠামোর ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রয়োজন। আজকের এ গবেষণার তথ্য আমি নগরীর সড়ক ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে কাজে লাগাবো।
ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেইফটি ২০২০-২০২৫ (বিআইজিআরএস)-এর অংশ হিসেবে জন্স হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিট তাদের স্থানীয় অংশীদার সিআইপিআরবির সাথে মে ২০২২ থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে সড়ক নিরাপত্তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য পর্যায়ক্রমে রোডসাইড অবজারভেশনাল স্টাডি পরিচালনা করেছে। সেই স্টাডির ফলাফল কর্মশালায় তুলে ধরা হয়।
জন্স হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিট থেকে ডা. শিরিন ওয়াধানিয়া এবং সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন এন্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ থেকে ডা. সেলিম মাহমুদ চৌধুরী গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন। তাদের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গবেষণার সময়কালে মোট ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৮৭২ টি নমুনা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
কর্মশালায় গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানানো হয়, চট্টগ্রামে মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীদের মধ্যে মাত্র ৫৬ শতাংশ হেলমেট ব্যবহারের করেন। অন্যদিকে গাড়ি ব্যবহারকারীদের মধ্যে সিটবেল্ট ব্যবহারের হার মাত্র ১৫ শতাংশ। এছাড়াও প্রায় ৪০ শতাংশ যানবাহন অনুমোদিত গতির বেশি গতিতে চলতে দেখা যায়।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিআইজিআরএস-এ অংশগ্রহণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আনুষ্ঠানিকভাবে চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনা মোকাবেলায় কাজ শুরু করেছে। তিনি প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম পরিকল্পনা করার সময় রোডসাইড অবজারভেশনাল স্টাডি-এর ফলাফল ব্যবহার করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং কর্মশালার সকল অংশগ্রহণকারীকেও তা করার জন্য অনুরোধ জানান।
সভায় চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার ফলে বাংলাদেশ বিশেষ করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এছাড়াও তিনি তার এলাকায় সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের গৃহীত উদ্যোগ ও চলমান কার্যক্রমের কথা জানান।
সিআইপিআরবির ডেপুটি ম্যানেজার (এমএন্ডই) কাজী বোরহান উদ্দিনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) কাজী হুমায়ূন রশিদ, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমানসহ সিসিসি, সিডিএ ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়াও বাংলাদেশের বিআইজিআরএস-এর ঢাকা ও চট্টগ্রামের কর্মকর্তাবৃন্দ, যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৯:৩৮ ১৭২ বার পঠিত