তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের মানবাধিকার সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি একপেশে ও পক্ষপাতমূলক।
বুধবার (২২ মার্চ) সকালে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজপেপার প্রেস ওয়ার্কার্স ও বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারী ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা (যুক্তরাষ্ট্র) সরকারবিরোধী বিভিন্ন এনজিও এবং প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছে। তাই প্রতিবেদনটি একপেশে ও পক্ষপাতমূলক।’
বাংলাদেশের ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়েও তো অনেক কথা আছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প তো নির্বাচনী পরাজয় এখনো অফিশিয়ালি মেনে নেননি। ট্রাম্পের নেতৃত্বে ক্যাপিটল হিলে যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, তেমন কিছু তো আমাদের দেশে হয়নি। সুতরাং আমাদের নির্বাচন নিয়ে কথা বলার আগে তাদের নিজেদের নির্বাচনের দিকে তাকানো উচিত বলে আমি মনে করি।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করছেন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি পুরো প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করছি না। কারণ, সেখানে আরও অনেক ভালো কথাও বলা আছে। তবে সার্বিকভাবে মানবাধিকার, নির্বাচন ও গণতন্ত্র সংক্রান্ত যেসব বিষয় আছে সেগুলো পক্ষপাতমূলক।’
বাংলাদেশে বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে দেশে বছরে গড়ে ১০০০ ব্যক্তি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়, সেখানে অন্য দেশের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলার নৈতিকতা আছে কিনা, দেখার বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড আমাদের দেশে হয় না - সেটি আমি বলছি না। অবশ্যই বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড মাঝে-মধ্যে হয়। কিন্তু সেগুলো তদন্ত হয় এবং তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তিরও বিধান আছে।’
উল্লেখ্য, গেল সোমবার (২০ মার্চ) মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে ‘২০২২ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাক্টিসেস: বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনে ব্যালট বাক্স ভর্তি, বিরোধী দলের এজেন্ট এবং ভোটারদের ভয় দেখানোসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে পর্যবেক্ষকদের কাছে ওই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বলে বিবেচিত হয়নি।’
এ সময় বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারি ফেডারেশনের মতিউর রহমান তালুকদার, মো. বজলুর রহমান মিলন, মো. খায়রুল ইসলাম, মো. তানভীর হোসাইন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. আব্দুল গফুর, মো. রফিকুল ইসলাম, হাবিবুল্লাহ, মো. শাহাদাত হোসেন, আব্দুল কাদির, মো. হামিদুর রশিদ খান, বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজ পেপার প্রেস ওয়ার্কার্সের মো. আলমগীর হোসেন খান, শামীম চৌধুরী, মো. কামাল উদ্দিন, মো. রাজ্জাক পাটোয়ারি, এ এইচ এম নাজমুল আহসান, মো. মোস্তাক আহমদ, তাজাম্মেল হক, মো. ইফসুফ আলী, মো. আবদুল মান্নান, মো. আতিউর রহমান, মো. লিয়াকত আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:১২:৪৮ ১৮৮ বার পঠিত