আজ (২৬ মার্চ ২০২৩) ইতালির রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলাদেশের ৫২তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। ইতালি, সার্বিয়া ও মন্টিনিগ্রোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ শামীম আহসান সকাল ১০টায় দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর এক মিনিট নীরবতা পালন ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বটি মিশনের অডিটোরিয়ামে কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও মিশনের কর্মকর্তা- কর্মচারিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে তেলাওয়াত এবং রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং আলোচনা সভা। আলোচনা পর্বে কমিউনিটির রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধু ও সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ও শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ শামীম আহসান তাঁর স্বাগত বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন যে তাঁর সম্মোহনী নেতৃত্ব ছিল দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চালিকাশক্তি। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি ব্যক্ত করেন যে, বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সমগ্র বাঙালি জাতিকে এক সুতোয় সংযুক্ত করেছে যা মাত্র নয় মাসে বাংলাদেশের দীর্ঘ লালিত স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তা করেছে। রাষ্ট্রদূত আরও উল্লেখ করেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর অসাধারণ সাফল্যের জন্য একটি “রোল মডেল” হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। গৌরবময় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের এই আনন্দঘন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত ইতালিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ঐক্যের আহ্বান জানান এবং মিশনের কাঙ্খিত পর্যায়ের সেবা সম্প্রসারণে আন্তরিক সহযোগিতা ও পরামর্শ কামনা করেন।
পবিত্র রমজান মাসের কারণে, জাতীয় ও স্বাধীনতা দিবসের সংবর্ধনা ২০ মার্চ ২০২৩ তারিখে রোমের অভিজাত ‘পারকো দে প্রিন্সিপি’ হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগতিক দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, কূটনৈতিক কোরের সদস্য, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সুশীল সমাজের সদস্যবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী ও চেম্বার নেতৃবৃন্দ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিসহ প্রায় ২০০ অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাসচিব (সচিব) জনাব ডাঃ জোভানি লিওনার্দি। ইতালীয় এবং বাংলাদেশী শিল্পীদের বাংলা ভাষায় চমৎকার পরিবেশনা অনুষ্ঠানটিতে বর্ণিল মাত্রা যোগ করে এবং উপস্থিত দর্শকদের বিমোহিত করে।
মূল অনুষ্ঠানের পাশাপাশি উক্ত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে দেশের পর্যটন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার উপর তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন এবং মোটিফ দিয়ে সুসজ্জিত বাংলাদেশ কর্নারে রপ্তানিযোগ্য সামগ্রী এবং হস্তশিল্পের প্রদর্শনী এবং দ্বিভাষিক প্রকাশনা প্রদর্শন করা হয় যা অতিথিবৃন্দের প্রশংসা অর্জন করে। অতিথিদের দূতাবাসের দ্বিভাষিক প্রকাশনা “অপর্চুনিটা বাংলাদেশ” এর একটি করে কপি প্রদান করা হয়। ইতালীয় সুস্বাদু খাবারের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশী খাবারও পরিবেশন করা হয় যা ব্যাপক প্রশংসা পায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:১১:০০ ১৪৬ বার পঠিত