প্রতিটি জাতিরই আনন্দ ও খুশির জন্য নির্দিষ্ট কিছু দিন রয়েছে। মুসলমানদের জন্য বছরে দুটি আনন্দ উৎসব। একটি ঈদুল ফিতর আর অপরটি ঈদুল আজহা। এক মাস রমজানের রোজা রাখার পর ১ শাওয়াল ঈদুল ফিতর আর ১০ জিলহজ ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়।
এ দুই ঈদের তাৎপর্য হলো বিশ্বের মুসলমানরা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কর্তৃক প্রদত্ত অগণিত নিয়ামতের শোকরিয়া আদায় করবে নামাজ, দান-সাদকা ও কোরবানির মাধ্যমে। এরূপ আনন্দ অনুষ্ঠানে জাগতিক লাভের সঙ্গে সঙ্গে পারলৌকিক উপকারের কথাও বলা হয়েছে।
হজরত আউস আনসারি (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘ঈদুল ফিতরের দিন সকালে ফেরেশতারা রাস্তায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে যান এবং মুসলমানদের উদ্দেশে বলতে থাকেন, হে মুসলিমগণ! তোমরা দয়ালু প্রতিপালকের দিকে এগিয়ে আসো। উত্তম প্রতিদান ও বিশাল সাওয়াব প্রাপ্তির জন্য এগিয়ে আসো। তোমাদেরকে রাতে নামাজের নির্দেশ দেয়া হলে তোমরা সে নির্দেশ মেনে নামাজ আদায় করেছো। তোমাদের দিনে রোজা রাখতে বলা হলে তোমরা সে নির্দেশও পালন করেছো, এক মাস রোজা রেখেছো। গরিব ও দুঃখীদের পানাহারের মাধ্যমে নিজ প্রতিপালককে তোমরা পানাহার করিয়েছো। এখন নামাজ পড়ার মাধ্যমে এগুলোর প্রতিদান ও পুরস্কার গ্রহণ করো। ঈদের নামাজ পড়ার পর ফেরেশতাগণের মাঝে একজন ঘোষণা দেন- তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। সুতরাং তোমরা সফলতার পতাকা নিয়ে নিজের বাড়ি ফিরে যাও। এ দিনটি হচ্ছে পুরস্কার প্রদানের দিন। আকাশে এ দিনকে পুরস্কারের দিনই নামকরণ করা হয়েছে।’ -তাবরানি
এ জন্য ঈদের দিনের কিছু আমলও রয়েছে। ঈদের দিনের পালনীয় কিছু সুন্নত ও মোস্তাহাব এখানে তুলে ধরা হল-
ভোরে উঠে নিজ এলাকার মসজিদে ফজর নামাজ জামাতে আদায় করে দৈহিক ও মানসিকভাবে ঈদের নামাজ আদায় করার প্রস্তুতি গ্রহণ করা।
মিসওয়াক করাসহ ভালোভাবে গোসল করা।
সুগন্ধি ব্যবহার করা।
সাধ্যানুযায়ী সুন্দর, পবিত্র ও উত্তম পোশাক পরিধান করা।
সাদকাতুল ফিতর, যার ওপর ওয়াজিব, তা ঈদের নামাজের পূর্বেই আদায় করা।
ঈদগাহে দ্রুত আগে যাওয়া।
সামর্থ্য অনুযায়ী দানখয়রাত করা।
ঈদুল ফিতর নামাজের আগে কিছু খাওয়া এবং ঈদুল আজহায় কোরবানির পর খাওয়া।
হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া।
ঈদগাহে এক রাস্তায় যাওয়া এবং অন্য রাস্তায় আসা।
ধীর স্থিরভাবে ঈদগাহে যাওয়া।
ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার সময় নিঃশব্দে এই তাকবির পড়া- ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’ ঈদুল আজহার দিন ঈদগাহে যাওয়ার সময় এই তাকবিরটি উচ্চৈস্বরে পড়া মোস্তাহাব।
চলতে ফিরতে ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম’ (আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে ও আপনাদেরকে কবুল করুন) - এ বাক্য বলে অপর মুসলমানকে অভ্যর্থনা জানাবে।
কোরবানি ঈদের দিন যে লোক নিজের পক্ষ থেকে কোরবানি করবে, তার জন্য ঈদের নামাজ ও কোরবানির জন্তু জবেহ করার পর নখ ও লোম কাটা মোস্তাহাব। এতে করে হাজিদের সঙ্গে তার সামঞ্জস্য ঘটে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:২৯:০০ ১৬৪ বার পঠিত