ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, পহেলা বৈশাখ (বাংলা নববর্ষ বরণ) উদযাপনকে ঘিরে সরাসরি কোন ধরনের জঙ্গি থ্রেট বা হুমকি নেই। রমনা বটমূলকে ঘিরে পুলিশ ও বিভিন্ন ইউনিটের পাশাপাশি তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে রমনার বটমূলে অনুষ্ঠানকে ঘিরে কোন ধরনের জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নেই। তবে, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের প্রস্তুতি রয়েছে।’
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে রমনা বটমূলে বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি পুলিশের বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘উড়োচিঠি দাজ্জাল বাহিনী নামে এসেছে। দাজ্জাল বাহিনী নামে বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি সংগঠন নেই। কোনো দলও নেই। এটা আমাদের কাছে মনে হয়েছে কোনো দুষ্ট পোলাপান অতিউৎসাহী হয়ে এমন চিরকুট লিখেছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজকদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, তাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। তারপরও এই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।’
আদালত পাড়া থেকে দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত ১০ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক জঙ্গিরা নজরদারিতে, তাদেরও গ্রেফতার করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এবারের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান আনন্দমুখর করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। রমনা, টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরসহ যে সকল স্থানে নববর্ষের আয়োজন করা হবে, সব খানেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
ডিএমপির পুলিশ প্রধান বলেন, এবারের পহেলা বৈশাখ যেন ঢাকাবাসীসহ সব বাঙালি উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করতে পারে সেজন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। রমনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি, রবীন্দ্র সরোবর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক ২ হাজার ৭শ’ পুলিশ কাজ করছে।
খন্দকার গোলাম ফারুক আরও বলেন, পহেলা বৈশাখে অনেক সময় দেখা যায় উঠতি বয়সী ছেলেরা ভুভুজেলাসহ বিভিন্নভাবে উচ্চ শব্দ করে নগরবাসীর দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। এ ধরনের শব্দ না করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি। ব্যাগ নিয়ে কেউ রমনা পার্কে প্রবেশ করতে পারবেন না। প্রত্যেককে চেক করা হবে। তাই বাড়তি কোনো কিছু নিয়ে রমনায় না আসতে নগরবাসীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।
রমনা বটমূলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রমনা বটমূলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমাদের সিটিটিসির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট আন্তর্জাতিক মানের। যদি কোথাও বোমা থাকে, তাহলে সিটিটিসির রোবোটিকস সিস্টেম ও ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে আইডেন্টিফাই করা যাবে। পরবর্তী সময়ে রোবটের মাধ্যমে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা যাবে। এরমধ্যে যদি কোনো দুষ্কৃতকারী ঢুকে যায়, তাহলে সোয়াত টিম তাদের মোকাবেলা করতে সক্ষম।
তিন স্তরের নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, রমনা কেন্দ্রিক মোট ৯টি গেট থাকবে। এরমধ্যে চারটি গেট দিয়ে প্রবেশ করা যাবে। বাকি ৫টি গেট দিয়ে প্রবেশ-বাহির হওয়া যাবে। প্রত্যেকটি গেটে পুলিশ, আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। প্রত্যকেকে সার্চ করে রমনায় প্রবেশ করানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৩২:৫৬ ১৩৭ বার পঠিত