মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩

সংযোগ কেটে দিয়ে ডিস মেকানিক সেজে বাসা রেকি, তারপর ডাকাতি

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » সংযোগ কেটে দিয়ে ডিস মেকানিক সেজে বাসা রেকি, তারপর ডাকাতি
মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩



সংযোগ কেটে দিয়ে ডিস মেকানিক সেজে বাসা রেকি, তারপর ডাকাতি

রাজধানীর ডেমরা এলাকায় ৪তলা একটি ভবনকে টার্গেট করে ডাকাতরা। যেখানে মালিক নিলুফা ইয়াসমিন সব ফ্লোর ভাড়া দিয়ে দ্বিতীয় তলায় একা বসবাস করেন। গত এপ্রিল থেকেই বাড়িটিতে ঢোকার চেষ্টা করছিল ডাকাতরা। ডিস সংযোগের তার কেটে দিয়ে মেকানিক পরিচয়ে একাধিকবার বাসায় ঢুকে রেকি করে চক্রের সদস্যরা।

গতকাল সোমবার ডাকাত সর্দার উজ্জ্বল ৪ সহযোগীকে সঙ্গে বিদেশি পিস্তলসহ ওই বাড়িতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। বিষয়টি গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় র‌্যাব। এ সময় ডাকাত দলনেতা মো. উজ্জ্বল হোসেন ও তার এক সহযোগী রাশেদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৩ এর একটি দল।

মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৩ অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মহাসড়ক ও বিভিন্ন বাড়িতে বেশকিছু ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। র‌্যাব-৩ সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারে বিশেষ গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে।

র‌্যাব-৩ এর একটি দল গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, ঢাকার ডেমরা থানাধীন বাঁশেরপুল এলাকার টার্গেট করা বাড়ির সামনে একদল ডাকাত অবস্থান করছে, এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও বাকি তিনজন পালিয়ে যায়।

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ডাকাত দলের সর্দার উজ্জ্বল হোসেন পুরো দলটি পরিচালনা করেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে উজ্জ্বলের নেতৃত্বে তার দলটি দীর্ঘদিন ধরে লুটপাট, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। দলটির সদস্য ১০ জন।

রাজধানীর ডেমরা, শনিরআখড়া, যাত্রাবাড়ী ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় বড় ধরনের ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে তারা। গত পাঁচ মাসে নারায়ণগঞ্জসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ৭টি ডাকাতি করেছে। আরও ৮/১০ টি বড় ধরনের ডাকাতির চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে।

ডাকাত সর্দার উজ্জ্বল তার দলের অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকের ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াত এবং ডাকাতির জন্য রেকি করত।

পরবর্তীতে উজ্জ্বল দলের অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে টার্গেট করা বাড়িগুলোতে ডাকাতির জন্য পরিকল্পনা করে বিদেশি পিস্তল, বিদেশি রিভলভার, বিস্ফোরক সরঞ্জামাদি এবং বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিত হামলা চালাত।

উজ্জ্বল হোসেন সম্পর্কে র‌্যাব-৩ অধিনায়ক বলেন, মূলত ব্যানার, বিলবোর্ড তৈরির ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রেসের দোকানে কাজ করেন তিনি। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করে মামার স্টিলের আসবাবপত্র তৈরির কারখানায় দীর্ঘ ৫ বছর কাজ করেন। সেখান থেকে পালিয়ে তিনি ছন্নছাড়া জীবনযাপন শুরু করেন। তখন থেকে উজ্জ্বল ছিনতাই, চুরি, মাদকাসক্তির মতো বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন।

একসময় তিনি অবৈধভাবে অধিক অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে ডাকাত চক্র গড়ে তোলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে এই ডাকাত চক্রটি নিজে নেতৃত্ব দিয়ে পরিচালনা করে আসছিলেন। তার নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তার রাশেদ ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। তিনি মূলত রং মিস্ত্রির কাজ করেন এবং তিনি কাজের অজুহাতে বিভিন্ন বাড়িতে রেকি করতেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪৩:৪৬   ১০৬ বার পঠিত