বুধবার, ১৯ জুলাই ২০২৩

আমন মৌসুমের শুরুতেই সার সংকট, চিন্তায় কৃষক

প্রথম পাতা » কৃষি ও বাণিজ্য » আমন মৌসুমের শুরুতেই সার সংকট, চিন্তায় কৃষক
বুধবার, ১৯ জুলাই ২০২৩



আমন মৌসুমের শুরুতেই সার সংকট, চিন্তায় কৃষক

আমন মৌসুমের শুরুতেই সার সংকট, চিন্তায় কৃষক

ইরি ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশ জয়পুরহাটের কৃষকরা আবারও স্বপ্ন দেখছেন আমন চাষাবাদ নিয়ে। এরই মধ্যে জেলার বিভিন্ন মাঠে বীজতলা পরিচর্যা, ক্ষেত প্রস্তুত ও চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে মৌসুমের শুরুতেই বস্তাপ্রতি আড়াইশ টাকা দাম বাড়াসহ চাহিদামতো এমওপি (পটাশ) সার না পাওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন তারা।

সরেজমিন দেখা যায়, উত্তরের ভারত সীমান্তবর্তী জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন মাঠে কৃষকরা পরম মমতায় বীজতলা থেকে বীজ সংগ্রহ করছেন। কেউ আবার আধুনিক যন্ত্র (পাওয়ার ট্রিলার) দিয়ে হালচাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এ মৌসুমে জয়পুরহাট জেলায় ৩ লাখ ২৩ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ৬৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করছেন কৃষকরা। এ অবস্থায় ইরি ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে অনেকটাই হতাশ কৃষকরা মৌসুমের শুরুতে বস্তাপ্রতি আড়াইশ টাকা বাড়াসহ এমওপি (পটাশ) সার চাহিদামতো না পাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন তারা।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার ধারকী গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক, হিচমী মোল্লাপাড়া গ্রামের কৃষক নবিউল ইসলামসহ অনেকেই জানান, বোরো মৌসুমের ধান এখনও ঘরে। বাজারে দাম নেই। আবারও এক বুক আশা নিয়ে আমন চাষ শুরু করেছেন। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই সরকার বস্তাপ্রতি সারের দাম আড়াইশ টাকা বাড়িয়েছে। আবার এমওপি অর্থাৎ পটাশ সার চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও কোথাও সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে সারের দামও খুচরা দোকানিরা বেশি নিচ্ছেন।

জানা গেছে, জয়পুরহাটের ৫টি উপজেলায় জুলাই মাসে বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) ৫৮ জন ডিলার এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) ১১১ ডিলারের মাধ্যমে প্রত্যেককে ইউরিয়া ৪৬ মেট্রিক টন, টিএসপি ১০ মেট্রিক টন, ডেপ ১২ মেট্রিক টন ও এমওপি ৫ মেট্রিক টন করে বরাদ্দ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। চাহিদা অনুযায়ী অন্যান্য সার মিললেও এমওপি সার কৃষকদের দিতে পারছেন না খুচরা ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট ডিলাররা। তারা বলছেন, বরাদ্দ কম পাওয়ায় এমন সমস্যা তৈরি হয়েছে।

এ অবস্থায় জয়পুরহাট সদর উপজেলার মেসার্স মমতাজ উদ্দীন মণ্ডলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক তপন সাহা বলেন, ‘আমাদের চাহিদা অনুযায়ী পটাশ সার দিতে পারছে না জেলা প্রশাসন। যে কারণে মাঠপর্যায়ে আমরাও কৃষকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী পটাশ সার সরবরাহ করতে পারছি না। এতে অনেক কৃষকই হতাশ হচ্ছেন।’

তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, আমন চাষাবাদের জন্য কৃষকদের সুষম সার ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া কোনো ধরনের সারের ঘাটতি নেই। বাজারে কেউ যদি কৃত্রিম সার সংকট তৈরি করে এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম নেয়, সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেয়া তথ্যমতে, জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে আমনের বীজতলায় বীজ বোনা হয়, শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে মূল জমিতে রোপণ করা হয় এবং অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে ধান কাটা হয়। চলতি জুলাই মাসে বরাদ্দ হওয়া ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন এমওপি সারের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১৪৮ মেট্রিক টন উত্তোলন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:২৬:২৪   ১৯২ বার পঠিত