ফরিদপুরের চরভদ্রাসন সরকারি কলেজের একটি হেলে পড়া ভবনে চলছে পাঠদান। তা ছাড়া ভবনটির বের হয়ে আছে বিমের রড, খসে পড়ছে পলেস্তারা। ক্লাস চলাকালীন ভবন ভেঙে পড়ার আতঙ্কে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এতে শঙ্কিত অভিভাবকসহ সচেতন মহল।
জানা গেছে, ওই ভবনে একটি সম্মেলনকক্ষ, একটি কম্পিউটার ল্যাব ও একটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। কলেজে একটি তিনতলা ও একটি দোতলা ভবন রয়েছে। তিনতলা ভবনটি বিজ্ঞান এবং দোতলা ভবনটি মানবিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে বিজ্ঞান ভবনটির অবস্থা খুবই নাজুক। ঝুঁকিপূর্ণ এবং ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর তিনতলায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। সেই থেকে তিনতলা ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে ১০ একর ৪৮ শতাংশ জমি নিয়ে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৮ সালের ২ জানুয়ারি কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক মিলিয়ে ১ হাজার ৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। এখানে ২৯ জন শিক্ষক পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ২২ জন। শিক্ষকের সাতটি পদ শূন্য রয়েছে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, ১৯৯২ সালে তিনতলা ভবনটি নির্মাণ করা হয়। এর নিচতলায় পাঁচটি কক্ষের মধ্যে একটি অধ্যক্ষের, একটি উপাধ্যক্ষের, একটি শিক্ষক মিলনায়তন, কর্মচারীদের জন্য একটি কক্ষ এবং একটি ভান্ডারকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দোতলায় ছয়টি কক্ষের মধ্যে পশ্চিম দিকের শ্রেণিকক্ষের বিমের ঢালাই করা বেশ কিছু অংশ ভেঙে রড বের হয়ে গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। ভবনটি উত্তর দিকে কিছুটা হেলে পড়েছে।
মানবিক ভবন হিসেবে ব্যবহৃত কলেজ ক্যাম্পাসের দোতলা ভবনটির অবস্থা তুলনামূলক ভালো। এ ভবনও নির্মিত হয়েছে ১৯৯২ সালে। মানবিক ভবনের নিচতলায় কলেজের পাঠাগার অবস্থিত, যার নাম ‘অধ্যক্ষ আজহারুল হক পাঠাগার’। এ ছাড়া দুটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। দোতলায় রয়েছে একটি বড় কক্ষ। কক্ষটি কলেজের শিক্ষকরা আবাসন হিসেবে ব্যবহার করেন।
শিক্ষার্থী মো. জাবেদ আলী বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাসের সময় ভয়ে থাকতে হয়। মনে হয় এই বুঝি মাথার ওপর ছাদ ভেঙে পড়ে। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান কার্যক্রম।’
আরেক শিক্ষার্থী সাগর মণ্ডল বলেন, ‘ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। পলেস্তারা খসে পড়ছে। কখন-যে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে, সেই চিন্তায় থাকি।’
শওকত শেখ নামে এক ছাত্রের অভিভাবক বলেন, ‘ভবনের জীর্ণদশা। পরিস্থিতি খুবই খারাপ। ছেলেকে কলেজে পাঠিয়ে চিন্তায় থাকি।’
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ নিখিল রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘কলেজে অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। জরাজীর্ণ ভবন। শিক্ষকদের পদ শূন্য। কলেজে নেই কোনো ছাত্রাবাস। আমি সদ্য যোগদান করেছি। কলেজ ভবনসহ নানা সমস্যা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও পরামর্শ করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’
বাংলাদেশ সময়: ১২:৫৯:৪২ ১৬৯ বার পঠিত