অবশেষে গোয়েন্দার জালে ধরা পড়েছেন ‘বয়ান পার্টির’ সদস্যরা। সাত থেকে আট সদস্যের দলটি নারীদের টার্গেট করে হাতিয়ে নিতো মোটা অংকের টাকা বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (মতিঝিল বিভাগ) রাজীব আল মাসুদ।
সম্প্রতি সময় সংবাদে এসব তথ্য জানান তিনি। রাজধানী থেকে চারজনকে গ্রেফতারের পর জানা গেছে এ চক্রের সদস্যরা কেউ মাদারীপুর, কেউ নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় এসে অপকর্ম শেষ আবারও প্রতিদিন ফিরে যেতেন বলেও জানান তিনি।
গোয়েন্দা পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, রাজধানীতে একটি রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে ‘বয়ান পার্টির’ সদস্য সম্পর্কে। ওই ফুটেজে দেখা যায়, চলতি পথে কারও সঙ্গে দেখা হলেই হাত মেলানো আর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়া ব্যক্তিটিকে দেখতে যতটা সাদাসিধা মনে হয়, আসলে তিনি তা নন। আর যারা তার সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন তারাও পূর্ব পরিচিত। অর্থাৎ একই গুরুর শিষ্য তারা। ব্যতিক্রম শুধু বোরকা পরা নারীটি। যে উপকার নিতে আসেন। এ নারীই মূলত টার্গেট তাদের।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা মেলে তাদের। মুরব্বী টাইপের একজন দাঁড়িয়ে থাকেন নির্দিষ্ট জায়গাতে। পথচারী সেজে তার লোকেরাই এসে পীর মনে করে দোয়া নেন। আশপাশের লোকজনকে বোঝানোর চেষ্টা করেন বয়ষ্ক লোকটি অত্যন্ত কামেল। সব সমস্যার সমাধান আছে তার কাছে এভাবে তারা প্রতারণার কাজটি করে আসছিল।
পুলিশ এদের নাম দিয়েছে বয়ান পার্টি। সময় সংবাদে তাদের অপকর্ম নিয়ে খবর প্রচারের পর চক্রটির চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (মতিঝিল বিভাগ) রাজীব আল মাসুদ বলেন, বয়ান পার্টির সদস্যর রামপুরা থানা এলাকাতে একটা ঘটনা ঘটিয়ে চলে যায়। এরা সবাই ঢাকার বাইরে থেকে এসে প্রতিদিন কাউকে না কাউকে ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের টাকাসহ মূল্যবান সামগ্রী। অভিযোগ পাওয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশ সদস্য ছায়া তদন্ত নামেন। এরপর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়। সেখানে দেখা যায় এ দলে ৬ থেকে ৭ বা ৮ জনের একটি দল রয়েছে। মূলত যেসব নারীরা সকাল বেলায় হাঁটতে বের হন, বিশেষ করে ধার্মিক তাদের মনোযোগ আকষণ করেন, এরপর তাদের কাছ টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয় তারা।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এই চক্রের সদস্যদের হাতে প্রতারণার শিকার হয়েছেন অসংখ্য নারী। বাকি সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।