বন্যা কবলিত চট্টগ্রাম অঞ্চল পরিদর্শনে যাবেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » বন্যা কবলিত চট্টগ্রাম অঞ্চল পরিদর্শনে যাবেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
বুধবার, ৯ আগস্ট ২০২৩



বন্যা কবলিত চট্টগ্রাম অঞ্চল পরিদর্শনে যাবেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাবেন বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।

বুধবার (৯ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন৷

দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) প্রতিনিধিরা আসবেন৷ তারা আমাদের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলাপ করবেন৷ সে কারণে আমরা শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে প্রথমে চট্রগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগড়া, এরপর কক্সবাজারের চকোরিয়া পেকুয়ায় পরিদর্শনে যাব। পরিস্থিতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলে বান্দরবানের রুমা উপজেলা পরিদর্শনে যাব৷ সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করা হয়েছে৷’

তিনি বলেন, ‘এ পরিদর্শন টিমে আমি, আমার সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক যাবেন। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবসহ আরও কর্মকর্তারা যাবেন৷ গতকাল (মঙ্গলবার) থেকে পানি কমে যাচ্ছে৷ সেহেতু নতুন করে ঝুঁকির কিছুই নাই৷ এ পর্যন্ত কক্সবাজারের দুটি উপজেলা, বান্দরবানের দুটি উপজেলা ও খাগড়াছড়ির শহরতলীর কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে৷’

তিনি আরও বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে আমাদের জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে৷ ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী ও নৌ বাহিনীর সঙ্গেও যোগাযোগ হচ্ছে৷ পুলিশ সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে থেকে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন৷ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি৷ আপনারা আসার কিছুক্ষণ আগেও প্রধানমন্ত্রী কল করেছিলেন৷ তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি ও বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন৷’

‘আপনারা জানেন, টানা পাঁচদিন ভারী বর্ষণে পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয়৷ সেই ঢলের ফলে চট্রগ্রামের সাতকানিয়া ও লোহাগড়া উপজেলা, কক্সবাজারের চকোরিয়া উপজেলা, বান্দরবানের রামু উপজেলাসহ রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির কয়েকটি উপজেলা প্রবলভাবে প্লাবিত হয়৷ হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে৷ সেখানে আমাদের মাঠ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা উদ্ধার কাজ এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করে৷ একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেখানে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী মোতায়েন করা হয়৷ তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দুর্গত এলাকার জনগণকে উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে গেছেন। সেখানে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চলমান রয়েছে৷’

‘সোমবার (৭ আগস্ট) আমরা চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, বান্দরবন ও রাঙামাটিতে ১০ লাখ টাকা, ১০০ মেট্রিক টন চাল এবং ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠান৷ আজকে জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করেছি৷ চট্টগ্রামের পেকুয়া ও সাতকানিয়া লোহাগড়ায় পানি কমে গেলেও অনেক ক্ষতি হওয়ায় তারা আরও মানবিক সাহায্যের আবেদন করে৷ এ পর্যন্ত আমরা মোট ৭০ লাখ টাকা, ২১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৭০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি৷ একইসঙ্গে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং বিশুদ্ধ পানিও পাঠিয়েছি৷ জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তারা যেন নগদ অর্থে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেন৷’

এনামুর রহমান বলেন, ‘পাহাড় ধসে ২০১৭ সালে ১৫০ জনের বেশি লোক মারা গিয়েছিল৷ এরপর পাহাড় ধস হলেও কেউ মারা যায়নি৷ এবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুজন মা এবং তার কন্যা সন্তান মৃত্যুবরণ করেছে। পেকুয়া উপজেলায় মাটির ঘর ধসে তিনজন মৃত্যুবরণ করেছে৷ এটার জন্য পার্বত্য অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ আইন এবং জেলা প্রশাসকদের কাছে আমাদের নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে যেন পাহাড়ের ঢালে কেউ বসতি গড়তে না পারে৷ তারপরেও অবৈধভাবে অনেকেই বসবাস করে৷ সরকারিভাবে তাদের উচ্ছেদ করা হয়৷

‘এ বছর বৃষ্টিপাত দেখে পাহাড়ি অঞ্চলের অনেককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে৷ যার ফলে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে পাহাড় ধস হলেও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি৷ রাঙামাটিতে ২৩৫টি জায়গায় পাহাড় ধস হলেও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি৷ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেটা হয়েছে সে কারণে আমরা অত্যন্ত দুঃখিত৷ সেখানেও ক্রমান্বয়ে পাহাড়কে শক্তিশালী করতে এবং ধস যাতে না হয় সেজন্য গাইড ওয়াল তৈরি করা হচ্ছে৷ যতটা সম্ভব পাহাড় থেকে সরিয়ে নিচে ভূমিতে ঘরবাড়ি করে দেওয়া হচ্ছে৷’

‘যে বন্যা হয়েছে সেটাকে আমরা ফ্ল্যাশ ফ্লাড বলি৷ এটা আসলে মানুষের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা নেই৷ এটা প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটা অংশ৷ অতিবৃষ্টির ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে যাওয়ার নদীর যে ধারণক্ষমতা সেটা অনুযায়ী পানি বেশি ছিল৷ সে কারণে দুই কূল প্লাবিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে৷ এর একমাত্র উপায় নদী ড্রেজিং করে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি করা৷ ক্ষয়-ক্ষতির হিসাবটা পাওয়ার পর আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় একটি সভা ডাকব৷ সেখানে আমরা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ রাখব মাতামহুরি, সাঙ্গু ও হালদা নদী খনন করার৷’

ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্প করার চিন্তা-ভাবনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আজকেও প্রধানমন্ত্রী ২২ হাজার ঘর দিয়েছেন৷ যারা ভূমিহীন ও ঘরহীন রয়েছেন তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে৷ এছাড়া যারা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করছে এবং প্রতিবন্ধী, বেদে সম্প্রদায় ও হিজড়া সম্প্রদায়ের জন্যও ঘর করে দেবেন৷ এছাড়া যারা বস্তিতে বাস করছে তাদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ অব্যাহত থাকবে।’

বাংলাদেশ সময়: ১৮:০১:০৭   ১৬০ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


ইউক্রেনে কোন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা, জানালেন পুতিন
গাজায় ১৩ মাসে ৪৪ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরাইল!
ইতিহাসের এই দিনে
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
বিএনপির নামে কেউ চাঁদা নিতে আসলে বেঁধে রাখবেন: সাখাওয়াত
কপ২৯ সম্মেলনে অনুদানভিত্তিক অর্থ বরাদ্দের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার
‘মুক্ত খালেদা জিয়া’ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অর্জন : নাহিদ ইসলাম
বাংলাদেশ-ভারত আলোচনায় হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়টি উত্থাপন করা হতে পারে: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বাস ও আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে : অধ্যাপক ইউনূস

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ