সোমবার, ২১ আগস্ট ২০২৩

কুমিল্লায় কৃষকরা জৈব সার ব্যবহারে লাভবান হচ্ছেন

প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » কুমিল্লায় কৃষকরা জৈব সার ব্যবহারে লাভবান হচ্ছেন
সোমবার, ২১ আগস্ট ২০২৩



কুমিল্লায় কৃষকরা জৈব সার ব্যবহারে লাভবান হচ্ছেন

জেলার লাকসামে ছত্রাক থেকে জৈব সার উৎপাদন করছেন তরুণ উদ্যোক্তা মাইন উদ্দিনসহ কয়েকজন। ট্রাইকো কম্পোস্ট নামে পরিচিত এ সার ব্যবহারে মাটির গঠন ও বুনট উন্নত করে। পানি ধারণক্ষমতা বাড়িয়ে অপচয় রোধ করে। এ সার মাটির অম্লত্ব ও লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণ করে। এতে ফসলের উৎপাদন ও গুণগত মান বাড়ায়। কৃষকের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। মাটিতে থাকা ক্ষতিকারক ছত্রাকের খাবার উপকারী ছত্রাক খেয়ে ফেলে। এতে ছত্রাকের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা পায়।
লাকসামের গুনতী গ্রামে মাইন উদ্দিনের ট্রাইকো কম্পোস্ট সারের কারখানা। সেখানে ঝুরঝুরে সার প্যাকেট করছেন তিনি। তার কারখানা থেকে কৃষকরা এ সার কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কারখানার পাশে নার্সারি ও ফলের বাগান রয়েছে। পেঁপে বাগানে প্রয়োগ করা হয়েছে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার। বাগানের গাছ গুলো যেন ফলের ভারে ভেঙে পড়ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের সূত্র জানায়, ট্রাইকো কম্পোস্ট হলো এক ধরনের জৈব সার, যার মূল উপাদান ট্রাইকোডার্মা নামের একধরনের উপকারী ছত্রাক। বিভিন্ন জৈব উপাদান, যেমন গোবর, মুরগির বিষ্ঠা, সবজির উচ্ছিষ্ট, কচুরিপানা, কাঠের গুঁড়া, ভুট্টার ব্রান, চিটাগুড়, ছাই ও নিমপাতা এবং ট্রাইকোডারমা ছত্রাকের অণুবীজ নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে তা বিশেষ উপায়ে হাউসে জাগ দিয়ে ৪০-৪৫ দিন রেখে পচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি করা হয় ট্রাইকো কম্পোস্ট। এ কেম্পাস্ট সার তৈরির সময় হাউস থেকে নির্গত তরল নির্যাসকে ট্রাইকো লিচেট বলে। ট্রাইকো কম্পোস্ট উৎপাদনে কৃষক দুভাবে লাভবান হচ্ছেন। প্রথমত, এ সার জমিতে ব্যবহার করে কৃষকেরা ভালো ফলন পাচ্ছেন। অপরদিকে ট্রাইকো লিচেট ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি রোগবালাই দমনে তা ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে কৃষকদের রোগবালাই দমনে কীটনাশক ব্যবহার করতে হচ্ছে না।
ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম ফেজ-২ প্রজেক্ট (এনএটিপি-২) প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাইকো কম্পোস্ট উৎপাদন প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে। সেখান থেকে উৎপাদিত সার জমিতে ব্যবহার করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষকেরা। লাকসামের তেলিপাড়া গ্রামের কৃষক মনির হোসেন বাসসকে বলেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করেন। মাসে ২০টন সার উৎপাদন করেন তিনি। এটা তার ও অন্যান্য কৃষকের নার্সারি ও জমিতে ব্যবহার ভালো ফলন পেয়েছেন। এ সার মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা বেশি প্রচার করলে উদ্যোক্তা ও কৃষক আরো বেশি উপকৃত হবে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার প্রশিক্ষণ অফিসার মো. সিরাজ উদ্দিন বলেন, আমি আগে লাকসামে দায়িত্ব পালন করেছি। মাইন উদ্দিন একজন উদ্যোমী উদোক্তা। ট্রাইকো কম্পোস্ট থেকে উৎপাদিত সার ব্যবহার করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। ট্রাইকো কম্পোস্ট উৎপাদন ও লিচেট ব্যবহারে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৩৭:০৪   ১২৭ বার পঠিত