মাছ শিকারে ১৩২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর চেনা রূপে ফিরেছে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ। ৭২৫ বর্গকিলোমিটার দীর্ঘ এ হ্রদজুড়ে বসেছে জাল,জেলে ও নৌকার মেলা। দীর্ঘ বেকারত্ব কাটিয়ে শ্রমিকদের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে জেলেদের আহরণ করা মাছ ছোট ছোট নৌকায় করে নিয়ে আসা হয় জেলার সর্ববৃহৎ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারি ঘাটে। ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের হাঁকডাকে মুখর হয়ে ওঠেছে পন্টুন। দেখা যায়, রাজস্ব মিটিয়ে সকাল থেকে কেন্দ্রে অবতরণ করা মাছ বরফজাত করতে ব্যস্ত শ্রমিকরা। সেই মাছ ট্রাকে করে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
প্রথম দিনে কার্প জাতীয় মাছের চেয়ে চাপিলার পরমাণ ছিল বেশি। এদিন কাচকিও ধরা পড়েছে কম। এতে কিছুটা হতাশ ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরও ধরাপড়া মাছের আকার অনেক ছোট। তাছাড়া এবার কাচকি মাছ তেমন ধরা পড়েনি। দেশের বিভিন্ন জেলায় চাপিলা মাছের চেয়ে কাচকির চাহিদা বেশি। কিছুদিনের মধ্যেই এ মাছের দেখা মিলবে বলে আশাবাদী তারা।
অবতরণ কেন্দ্রের শ্রমিকরা বলেন, ‘মাছ ধরা বন্ধ থাকায় প্রায় সাড়ে চার মাস বেকার ছিলাম। উচ্চ মূল্যের এ বাজারে সংসার চালাতে আমাদের বেশ কষ্ট হয়েছে। পরিবার নিয়ে এবার সুন্দরভাবে দিন কাটানোর পালা।
এদিকে, অবতরণ কেন্দ্রে প্রথম দিনের মাছ দেখে গত বছরের চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায়ের আশা করছে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)।
বিএফডিসির ব্যবস্থাপক কমান্ডার আশরাফুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, ‘সকাল থেকেই পরিমাণে বেশ ভাল মাছ এসেছে ঘাটে। এছাড়া বাকি তিনটি ল্যান্ডিং স্টেশনেও একই রকম মাছ আসার খবর পেয়েছি। সব মিলিয়ে আশা করছি, আমাদের রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জন করা সম্ভব হবে।’
বিএফডিসির তথ্যমতে, গেল বছর জেলার ৪টি অবতরণ কেন্দ্রে ৫ হাজার ৫০৪ মেট্রিক টন মাছ অবতরণ হয়, যা থেকে রাজস্ব আদায় হয় ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন বাড়াতে সাধারণত ২০ এপ্রিল থেকে তিন মাস বন্ধ থাকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার। কিন্তু পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় এ বছর হ্রদে দুই দফা বাড়ানো হয়েছে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ। অবশেষে বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) মধ্যরাতে এ নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে ফের শুরু হয় মাছ শিকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৩৫:০১ ১৪২ বার পঠিত