ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় মঙ্গলবার (০৫ সেপ্টেম্বর) শুরু হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের ৪৩তম শীর্ষ সম্মেলন। এর আগে গতকাল সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একটি বৈঠকে সেরে নিয়েছেন। ওই বৈঠকে মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংকট নিয়ে পাঁচ দফা শান্তি পরিকল্পনায় সম্মত হন তারা।
আসিয়ানের সম্মেলন ঘিরে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আজ থেকে বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। সম্মেলনস্থলে পৌঁছাতে শুরু করেছেন বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান। আর এ সম্মেলনে যোগ দিতে গতকাল সন্ধ্যায় জাকার্তায় পৌঁছেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন এবং পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিনি ইন্দোনেশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর যাবেন।
এদিকে, শীর্ষ সম্মেলনের একদিন আগেই হয়ে গেল আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক। নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি সারতে ও সম্মেলনের আলোচ্য সূচি ঠিক করতে বৈঠকে বসেন মিয়ানমার ছাড়া বাকি সদস্যদেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বৈঠকে উঠে আসে মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংকট, দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যু, আঞ্চলিক বাণিজ্য ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বিষয়।
তবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এবারের সম্মেলনে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে মিয়ানমার ইস্যু। বৈঠকে মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংকট সমাধানে পাঁচ দফা শান্তি পরিকল্পনার বিষয়ে আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সম্মত হয়েছেন বলে জানানো হয়। এতে মিয়ানমারে বিবদমান সব পক্ষের মধ্যে সংলাপ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সংকট সমাধানের আহ্বানও জানানো হয়।
তবে মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক অসন্তোষ থামাতে পাঁচ দফা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বারবার আলোচনা হলেও এখন পর্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কোনো অগ্রগতি নেই আসিয়ানে। এই যখন অবস্থা তখন, বিশ্লেষকরা বলছেন মিয়ানমার ইস্যুতে আলোচনা এখন জোটের জন্য ঝামেলায় পরিণত হয়েছে।
আসিয়ানে আসা এক বিদেশি বিশ্লেষক জাানান, মিয়ানমার নিয়ে খোদ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর যে মন্তব্য পাওয়া যাচ্ছে তা খুবই হতাশাজনক। সদস্য রাষ্ট্রগুলো মনে করে, মিয়ানমার ইস্যুটি জোটের জন্য এক ধরনের বোঝা। এমন কি ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মিয়ানমারের দিকে নজর দিলে জোটের অন্যান্য লক্ষ্যগুলো অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে।
গত ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অংসান সু চির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন এনএলডি সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে রাজপথে বিক্ষোভের পাশাপাশি জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বিরোধীরা। আর তাদের দমনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জান্তা সরকার। এমন প্রেক্ষাপটে মিয়ানমারের শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আবারও আলোচনায় বসেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৫২:১৩ ১৬৫ বার পঠিত