বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩

দেশের প্রবৃদ্ধি বৈশ্বিক গড়ের দ্বিগুণ হবে, আইএমএফের এ রিপোর্টে বিএনপি কি বলবে : তথ্যমন্ত্রী

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » দেশের প্রবৃদ্ধি বৈশ্বিক গড়ের দ্বিগুণ হবে, আইএমএফের এ রিপোর্টে বিএনপি কি বলবে : তথ্যমন্ত্রী
বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩



দেশের প্রবৃদ্ধি বৈশ্বিক গড়ের দ্বিগুণ হবে, আইএমএফের এ রিপোর্টে বিএনপি কি বলবে : তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিশ্বময় যখন অর্থনৈতিক মন্দা এবং প্রবৃদ্ধি নিচের দিকে যাচ্ছে, সেখানে বিশ্বের গড় প্রবৃদ্ধির চেয়ে আমাদের প্রবৃদ্ধি বেশি হবে, এটি আইএমএফের রিপোর্ট। এই রিপোর্টের পর মির্জা ফখরুল সাহেব কিম্বা বিএনপি নেতারা কি বলেন, এখন আমি অপেক্ষায় রয়েছি।
আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সাংবাদিকরা আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লিখিত ‘চলতি বছরের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি আগের ৩.৫ শতাংশ থেকে কমে ৩ শতাংশ এবং ২০২৪ সালে আরো কমে ২.৯ শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের নিচে নামবে না এবং ২০২৮ সালে ৭ শতাংশ হবে’ এ নিয়ে মন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চায়।
জবাবে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী চলমান মন্দার মধ্যেও আমাদের প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক ভালো। নিত্যপণ্যের উর্ধ্বগতি নিয়ে অনেক কথা হয়, কিন্তু আসলে পৃথিবীর সব দেশে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। অবশ্যই নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে, সরকার চেষ্টা করছে নানা ধরনের প্রণোদনা দিয়ে টিসিবির মাধ্যমে ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ড দিয়ে, ৫০ লাখ মানুষকে কম টাকায় চাল বিতরণ করে, আরো ১ কোটি মানুষকে নানা ধরনের খাদ্যশস্য বিতরণের মাধ্যমে কষ্ট লাঘবের চেষ্টা করছে। যে কারণে বাংলাদেশে হাহাকার নেই।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের ঘাটতি ঘটে নাই। ইউরোপ-আমেরিকায় নিত্যপণ্যের ঘাটতি ঘটেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সুপারমলে অনেকদিন যাবৎ ১ লিটারের বেশি তেল এবং ৬টার বেশি ডিম কিনতে দেওয়া হয়নি। করোনার সময় সেখানকার সুপার-মলগুলোতে টিস্যু পেপার বক্স শেষ হয়ে গিয়েছিলো। মানুষকে লাইন ধরতে হয়েছিলো। সেখানে অনেক পণ্য রেশনিং করে বিক্রি করা হয়েছে আমাদের দেশে সেই পরিস্থিতি হয়নি। করোনার মধ্যে পৃথিবীর মাত্র ২০টি দেশে পজেটিভ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিলো তার মধ্যে আমাদের অবস্থান ছিলো তৃতীয়। আমাদের ওপরে ছিলো গায়ানা এবং সাউথ সুদান, যাদের তুলনায় আমাদের অর্থনীতি অনেক বড়। সুতরাং জনবহুল দেশ হিসেবে আমরা এক নম্বরই ছিলাম বলা যেতে পারে।’
বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিকে গ্রেপ্তারের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরূপ মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব কি বলতে চাচ্ছেন কারো বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকলেও তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। ওয়ারেন্ট থাকলে তো গ্রেপ্তার হবেই। ওয়ারেন্ট থাকলে তো আওয়ামী লীগ নেতাও গ্রেপ্তার হয়। যার বিরুদ্ধে ভাংচুরের, অগ্নিসংযোগের কিম্বা অন্য কারণে ওয়ারেন্ট আছে, পুলিশ তো তাকে গ্রেপ্তার করবে এটিই স্বাভাবিক। এটিই আইনি প্রক্রিয়া, এটিই আইনি ভাষা। তারা যে আইন আদালত মানে না, বিচার মানে না, সেটিরই প্রমাণ হচ্ছে এই প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল সাহেবের বক্তব্য।’
এর আগে বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরীর নেতৃত্বে উপদেষ্টা আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, শরীফ সাহাবুদ্দিন, বেলায়েত হোসেন, আহবায়ক রফিকুল ইসলাম রতন, সদস্য সচিব ফারুক আহমেদ তালুকদার এবং সম্পাদকদের মধ্যে রিমন মাহফুজ, মফিজুর রহমান খান বাবু, শামীম সিদ্দিকী, মাহবুবুর রহমান, দীপক আচার্য, নাজমুল আলম তৌফিক প্রমুখ মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন।
ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘গণমাধ্যমের মর্যাদা রক্ষা এবং জনগণের ঠিক তথ্য পাওয়ার জন্য ভূঁইফোড় পত্রিকা এবং অবৈধ আইপিটিভি বন্ধ করা একান্ত প্রয়োজন। এদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখা উচিত। আগাম নোটিশ ও অন্তত ৩ মাসের বেতন ছাড়া হঠাৎ করে সাংবাদিকদের চাকুরিচ্যুত করা বন্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। পাশাপাশি দেশের গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে কোনো বিদেশি ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না।’
সম্পাদক ফোরামের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন সভায় ফোরামের দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করেন। অনিয়মিতভাবে প্রকাশিত পত্রিকা এবং বিজ্ঞাপনে কমিশন বাণিজ্য বন্ধ করা, পত্রিকাগুলোর প্রচার সংখ্যা, ক্রোড়পত্র বন্টন এবং ডিক্লারেশন প্রদানে শৃঙ্খলা আনা, অসাংবাদিকদের সম্পাদকের দায়িত্বে না থাকা এবং সরকারি বিজ্ঞাপনের বকেয়া বিল দ্রুত পরিশোধের দাবি তুলে ধরেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী সম্পাদক ফোরামের দাবিগুলো পর্যালোচনার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আমরা গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাই। কারণ সরকার, গণমাধ্যম সবাই মিলে এক সাথে কাজ করলেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আমরা মুক্ত গণমাধ্যমে বিশ্বাস করি এবং স্বাধীন, মুক্ত, দায়িত্বশীল গণমাধ্যম দেশের গণতন্ত্রকে সংহত করে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আমাদের নির্বাচন নিয়ে, গণতন্ত্র নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র আছে, দেশে আবার বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করার ষড়যন্ত্র আছে। সেই প্রেক্ষাপটে যাতে কেউ দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে গণতন্ত্রকে ব্যাহত করতে না পারে, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র না করতে পারে, সে জন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই।’

বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৬:৩৯   ১০০ বার পঠিত