রংপুর মহানগরীতে কালো ধান (ব্ল্যাক রাইস) চাষ করে সাড়া ফেলেছেন এক তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা। প্রতিদিন তার এ ধান চাষ দেখতে ভিড় করছেন স্থানীয় কৃষকরা। জেলায় এ জাতের ধান চাষে সাফল্য দেখে অনেক কৃষকরাই ব্ল্যাক রাইস চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
কালো ধানের চালে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা ফাইবার হার্টকে সুস্থ রাখে। এ ধানের চালে রয়েছে ডায়াবেটিস, স্নায়ুরোগ ও বার্ধক্য প্রতিরোধ ক্ষমতা। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, রংপুর মহানগরীর ৬ নং ওয়ার্ডের চব্বিশ হাজারির উত্তরপাড়া গ্রামে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মিলন রায় ২০ শতক জমিতে ব্ল্যাক রাইসের পাশাপাশি ২৫ শতক জমিতে বি-৫২ প্রজাতির ধান চাষ করছেন।
স্থানীয়রা জানান, দেশের বিভিন্নস্থানে বিচ্ছিন্নভাবে কালো ধানের চাষ হলেও এই এলাকায় প্রথম। এলাকায় নতুন জাতের ধান চাষ দেখতে মিলনের খেতে ভিড় জমাচ্ছেন তারা। ব্ল্যাক রাইস ধান গাছ প্রথমে সবুজ থাকলেও পাকার সঙ্গে সঙ্গে কালো হতে শুরু করে। এ চাল দামেও তেমন, পুষ্টিগুণেও তেমন ভরপুর।
ওলি কান্ত বর্মন, পরিতোষ রায়সহ কয়েকজন স্থানীয় কৃষক বলেন, এ ধরনের চাল আগে কখনও দেখিনি। এলাকায় এ ধান প্রথমবার চাষ হচ্ছে। এই প্রজাতির ধানে প্রচুর পুষ্টিগুণ আছে। আমরাও এ জাতের কালো ধান চাষে আগ্রহী।
তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মিলন রায় বলেন, ইউটিউবে প্রথম এ ধানের চাষাবাদের বিষয়ে দেখেন ও বিস্তারিত জানেন। পরে ৫০০ টাকা দিয়ে পঞ্চগড় থেকে ২ কেজি বীজ ধান কিনেছিলাম সাবেক একজন সেনা সদস্যর কাছ থেকে। ব্ল্যাক রাইস নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহলের কমতি নেই। অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠছেন এই ধান চাষে।
তিনি বলেন, ব্ল্যাক রাইসকে স্বাভাবিক ধানের মতই পরিচর্যা করতে হয়। অতিরিক্ত কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন না হলেও অন্য ধানের তুলনায় অধিক লাভবান হওয়া যাবে। এ বছর পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ করেছেন তিনি। বাণিজ্যিকভাবে এটি বিক্রির বিষয়ে অনেকটাই চিন্তিত। উৎপাদিত এই চাল কোথায় বিক্রি করবেন তা জানেন না তিনি।
কৃষি অফিসে যোগাযোগ করেছেন কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে কোন দফতরেই যোগাযোগ করেননি।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের রংপুরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. ওবায়দুর রহমান মণ্ডল জানান, ব্ল্যাক রাইস রোপনের বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোন ধরনের যোগাযোগ করেন নি তিনি। ব্ল্যাক রাইস বিক্রির বিষয়ে কোন সহযোগিতা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে পাবেন কি না এ বিষয়ে জানান, এটি সম্পূর্ণ কৃষি বিপণন অধিদফতরের অন্তর্ভুক্ত। এটি বাণিজ্যিকভাবে বাজারে বিক্রি করা অনেক কঠিন। কিছু সুপারশপে এটি বিক্রি করা সম্ভব।
বাংলাদেশ সময়: ১১:০২:২৭ ১৩৫ বার পঠিত