মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

‘৪০০ সেকেন্ডে তেল আবিব’ আঘাত হানবে ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র

প্রথম পাতা » বিবিধ » ‘৪০০ সেকেন্ডে তেল আবিব’ আঘাত হানবে ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র
মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩



‘৪০০ সেকেন্ডে তেল আবিব’ আঘাত হানবে ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র

ইরানের প্রথম হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘ফাত্তাহ’। চলতি বছরের জুন মাসে মিসাইলটি জনসম্মুখে উন্মোচন করা হয়। বলা হচ্ছে, শব্দের চেয়ে ১৫ গুণ দ্রুতগতিতে ১৪০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে ক্ষেপণাস্ত্রটি।

ক্ষেপণাস্ত্রটি উন্মোচনের পরই একটি প্রপাগান্ডামূলক বার্তা প্রকাশ করে ইরান। রাজধানী তেহরানে খাড়া করা হয় মিসাইলের ছবিসহ বিলবোর্ড। যার ওপর গোটা গোটা অক্ষরে লেখা, ‘৪০০ সেকেন্ডে তেল আবিব’ অর্থাৎ ৪০০ সেকেন্ডেই তেল আবিবে আঘাত হানবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি।

ফারসির পাশাপাশি হিব্রু ভাষাতেও লেখা হয় সেই বার্তা। এর মধ্যদিয়ে কার্যত নিজেদের অন্যতম প্রধান শত্রু ইসরাইলকে সরাসরি হুমকি দেয় ইরান। তবে ইসরাইল এর জবাবে বলে, ইরানের যে কোনো হুমকি মোকাবেলায় সব সময়ই প্রস্তুত তেল আবিব।

সেই সক্ষমতাও তাদের আছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনকাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের আকস্মিক অভিযান ও এরপর হামাস শাসিত গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের অব্যাহত বিমান হামলার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে সৃষ্ট তুমুল উত্তেজনার মধ্যে ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের সেই প্রপাগান্ডা ছবি নতুন করে সামনে এসেছে।

জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদন মতে, ২০২২ সালের নভেম্বরে হাইপারসসিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা চালায় ইরান। ওই সময় ‘সুবহে-সাদিক’ নামে ইরানের একটি দৈনিক পত্রিকার প্রথম পাতায় একটি হুমকিমূলক বার্তা প্রকাশ করা হয়। তাতে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, ইরানের নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্র মাত্র ৪০০ সেকেন্ডে ইসরাইলে আঘাত হানতে পারবে।

ইসলামিক রিভোল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) বিমান বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল আমির আলি হাজিজাদেহকে উদ্ধৃত করে সে সময় পত্রিকায় বলা হয়, ইরান হাইপারসনিক মিসাইলের প্রযুক্তি হাতে পেয়ে গেছে।

প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক হামজা পারিয়াব এই ক্ষেপণাস্ত্রকে ‘গেম চেঞ্জার’ বলে অভিহিত করে বলেন, এটি অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাগুলোকেও ফাঁকি দিতে সক্ষম।

এর প্রায় সাত মাস পর গত ৭ জুন ক্ষেপণাস্ত্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হয়। সেই সঙ্গে তেহরানের রাস্তায় একটি বিলবোর্ডও খাড়া করা হয়। বিলবোর্ডটিতে ফারসি ও হিব্রু ভাষায় ভয়ঙ্কর বার্তা লেখা হয়।

ইরানের কর্মকর্তারা বলেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি ইসরাইলের আয়রন ডোম এবং যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টি ব্যালেস্টিক মিসাইল সিস্টেমসহ অত্যাধুনিক সব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ভেদ করতে সক্ষম।

আরও দাবি করা হয়, ইসরাইলের যেকোনো জায়গায় হামলা চালাতে পারে ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্র। কোনো ধরনের প্রতিরক্ষা দিয়ে ফাত্তাহকে ঠেকানো যাবে না। পরমাণূ বোমা বহনেও সক্ষম মিসাইলটি।

ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন অনুষ্ঠানের ভাষণে সেই কথাই আরেকবার জানিয়ে দেন ইরানের বিপ্লবী গার্ডের কমান্ডার আমির আলি হাজিজাদেহ। বলেন, মাত্র ৪০০ সেকেন্ডে অর্থাৎ সাড়ে ছয় মিনিটের মধ্যে তেলআবিব পৌঁছাতে পারবে ফাত্তাহ মিসাইল।

ইরানের কেরমানশাহ প্রদেশ থেকে তেল আবিবের দুরত্ব এক হাজার কিলোমিটার। ফাত্তাহর পাল্লা ১৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। তবে ইসরাইলের বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ইরান এখনও সম্পূর্ণভাবে হাইপাসনিক মিসাইল তৈরি করতে পারেনি। যদি সফলভাবে তৈরি করেই ফেলে, তাহলে সেটি ইসরাইলের জন্য বড় হুমকি।

তাদের ধারণা, রাশিয়া ইরানকে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি দিয়ে থাকতে পারে। তারা সতর্ক করেন, ইরানের অগ্রগতিতে রাশিয়ার সহযোগিতা তেহরানের সক্ষমতা বাড়াবে, বিপদে ফেলবে তাদের।

বাংলাদেশ সময়: ৭:৩৩:১৭   ১৩১ বার পঠিত