পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেছেন, শ্রেণী বৈষম্যহীন সর্বজনীন সকল মানুষের স্বীকৃতি হল পাসপোর্ট। মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি দেশ দিয়েছেন, একটি জাতি দিয়েছেন, একটি লাল সবুজের পতাকা দিয়েছেন। সেই বৈধতা নিশ্চিত করতেই বিশ্বব্যাপী স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমাদের পরিচিতি প্রকাশের দলিল হলো এই পাসপোর্ট। এ স্বীকৃতির অবজ্ঞা, অবহেলা ও দুর্নীতি কোনোভাবেই কাম্য না। মন্ত্রী বীর বাহাদুর সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে বলেন, বিদেশে পাসপোর্টধারী বাংলাদেশের পরিচয়ে কেউ কেউ আবার দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে বা করার চেষ্টা করছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে এ বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, পাসপোর্ট প্রদানের পূর্বে পাসপোর্ট গ্রহণকারী সম্পর্কে ভালোভাবে নিশ্চিত হয়েই পরে পাসপোর্ট ইস্যু করতে হবে। এর ব্যত্যয় যেন না হয়। বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী পরিচয়ে বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন যাতে না করতে পারে সেদিকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান পার্বত্য মন্ত্রী।
আজ বান্দরবান সদরে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এসব কথা বলেন।
বান্দরবানের সাধারণ জনগণকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে ৪ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গণপূর্ত বিভাগের বাস্তবায়নে বান্দরবানে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নব নির্মিত ভবন উদ্বোধন করা হয়। ইতোমধ্যে দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় মোট ৭১টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস বাংলাদেশী নাগরিকদের পাসপোর্ট সেবা প্রদান অব্যাহত রেখেছে। একইসাথে ৭টি বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস থেকে বাংলাদেশে আগত বিদেশি নাগরিকদের ভিসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ৩টি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসহ বেনাপোল ও বাংলা বান্ধা স্থল বন্দরে ৪৪টি ই-গেইট স্থাপনের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ইমিগ্রেশন সেবা প্রদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগণের জন্য ই-পাসপোর্ট ও ই-গেই ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দেশের নাগরিকদের পাসপোর্ট সিস্টেম আধুনিকীকরণে ডিজিটাল ই-সেবা নাগরিকদের সুবিধার্থে চালু করেছেন। মন্ত্রী বলেন, এর ফলে পাসপোর্ট সেবা প্রদানে দুর্নীতি অনেকাংশে কমে এসেছে । মন্ত্রী বলেন, পাসপোর্ট সেবা দুর্নীতির বেড়াজাল কাটিয়ে এখন মানুষের কাছে সহজলভ্য হয়েছে। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের মানুষ যদি ডিজিটাল না হন, নাগরিকেরা যদি সচেতন না হন, তাহলে যাহারা মানুষের মঙ্গলের জন্য এত কিছু করলেন তার কোন মূল্যায়ন থাকে না। বহিরাগত দেশের মানুষেরা যাতে বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার না করতে পারে তার জন্য সরকার ডিজিটাল ও আধুনিকায়ন ব্যবস্থা চালু করে সচেতনভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী বীর বাহাদুর দুর্গম পাহাড়ি এলাকার চিত্র তুলে ধরে বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম এলাকা থানচি ছিল সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা ও উন্নত যোগাযোগ হতে বঞ্চিত। সেখানে কোন সুসংবাদ বা দুঃসংবাদ পৌঁছানো সম্ভব ছিল না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থানচির মানুষের হাতে মোবাইল ফোন প্রযুক্তি পৌঁছে দিয়েছেন। থানচির মানুষ এখন অনায়াসেই সারা বিশ্বের সাথে যোগাযোগ করতে পারছে। মোবাইল সংযোগ এখন প্রতিটি দুর্গম এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে করেছে আগের চেয়ে অনেক সহজ ও সাবলীল। মোবাইলের মাধ্যমে সেকেন্ডের মধ্যেই তথ্য আদান-প্রদান হচ্ছে। আর এসব কিছুর কল্যাণে রয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ নুরুল আনোয়ার এর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রিজওনাল কমান্ডার ৬৯ ইনফেন্ট্রি ব্রিগেড ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম মাহিউদ্দিন আহমেদ, বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, বান্দরবান পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন, বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষ্মীপদ দাশ, বান্দরবান প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, পৌরসভার মেয়র সামসুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.শাহআলম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার বিশ্বাস, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শর্মী চাকমাসহ সরকারী বিভিন্ন দফতরের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪১:১৩ ১১৬ বার পঠিত