বাংলাদেশি-ব্রিটিশ বিজ্ঞানী, খ্যাতনামা জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও ঢাকাভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইসিসিসিএডি) পরিচালক অধ্যাপক সালিমুল হক মারা গেছেন।
গত শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার গুলশানে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
তার মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট। রোববার (২৯ অক্টোবর) ফেসবুকে এক পোস্টে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ‘অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে আমাদের পরিচালক অধ্যাপক সালিমুল হকের মৃত্যুর খবর জানাচ্ছি।’
আরও বলা হয়, ‘তিনি এমন একজন স্বপ্নদর্শী নেতা, যিনি শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইয়ের মশাল বহনকারী ছিলেন না, বরং সমগ্র বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য তার অতুলনীয় উত্তরাধিকার আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
সালিমুল হকের জন্ম ১৯৫২ সালে। ১৯৭৫ সালে যুক্তরাজ্যের লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ইমপেরিয়াল কলেজ থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর ১৯৭৮ সালে একই কলেজে তিনি পিএইচডি করেন।
বিশ্বের শীর্ষ জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের অন্যতম ছিলেন সালিমুল হক। তিনি দীর্ঘ তিন দশক ধরে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করেছেন। জাতিসংঘের নবগঠিত বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা বোর্ডের বাহ্যিক সদস্য ছিলেন সালিমুল হক।
তিনি জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ ও গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশনের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে কাজ করেছেন।
সালিমুল হক এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সব কটি জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন। ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট তৈরিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
২০২২ সালে বিজ্ঞানের জগতে সবচেয়ে বেশি আলোচনার জন্ম দেয়া ঘটনাগুলোর পেছনে ভূমিকা রাখা প্রভাবশালী ১০ ব্যক্তির একটি তালিকা প্রকাশ করে বিজ্ঞান সাময়িকী ‘নেচার’। ওই তালিকায় স্থান পাওয়া বিজ্ঞানীদের মধ্যে স্থান পায় সালিমুল হকের নামও।
সালিমুল হককে ব্রিটিশ সরকার সম্মানজনক ‘অফিসার অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার’ উপাধিতে ভূষিত করে। তাঁকে সম্মানজনক উপাধি দেয় যুক্তরাজ্যের নর্থামব্রিয়া ইউনিভার্সিটি, নিউক্যাসেল।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে সালিমুল হকের শতাধিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। জাতিসংঘ থেকে তাঁকে বিশ্বের জলবায়ুবিষয়ক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:২৬:০৬ ৮৪ বার পঠিত