বাংলাদেশে রাজনৈতিক সমাবেশে সহিংসতার ঘটনায় উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বাংলাদেশের সকল পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
একইসঙ্গে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ এবং ইচ্ছামতো নির্বিচারে আটক করা থেকেও বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে সম্মান করা উচিত বলেও জানিয়ে দিয়েছেন আন্তোনিও গুতেরেস।
স্থানীয় সময় সোমবার (৩০ অক্টোবর) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এসব মন্তব্য করেন।
স্টিফেন ডুজারিক বলেন, আমাকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে এবং আমি আপনাকে বলতে পারি, মহাসচিব বাংলাদেশে রাজনৈতিক সমাবেশে সহিংসতার খবর নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই সহিংসতায় অন্তত নয় জন মারা গেছেন এবং আরও অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, সব পক্ষকে সহিংসতা বা অত্যধিক বলপ্রয়োগ বা নির্বিচারে আটক থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এছাড়া মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে পারার অধিকারকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও তিনি জোর দিয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, গত ২৮ অক্টোবর প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে পুলিশ এবং বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ এখনও গ্রেপ্তার চালিয়ে যাচ্ছে, তারা প্রধান বিরোধীদের গ্রেপ্তার করেছে…। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এই অবস্থায় আপনি কীভাবে বিশ্বাস করতে পারেন যে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে, যখন বিরোধী দলের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটছে এবং সকল পর্যায়ের নেতা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে?
জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের এই মুখপাত্র বলেন, এসব ঘটনায় আমরা স্পষ্টতই উদ্বিগ্ন, যেমনটা আমি বলেছি, সহিংসতা নিয়ে। আমরা এখনও মনে করি, নির্বাচনের আগে শান্ত থাকা এবং সকল মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়ে শ্রদ্ধা থাকা জরুরি। তবে আমি মনে করি না, কেউ নির্বাচন নিয়ে পূর্বাভাস দিতে পারে।
এর আগে গত আগস্টের শেষের দিকেও বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। সেসময় তিনি বলেন, আমরা আগেই বলেছি, আমরা তো বটেই এবং আমি মনে করি, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় সবাই।
এর আগে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিরোধী মতের প্রতি সম্মান থাকা জরুরি বলে মন্তব্য করেছিলেন শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ক্লেমেন্ট ভউল। গত ৩১ জুলাই এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সহিংসতা ও গ্রেপ্তারের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এই অবস্থায় সব পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সেসময় তিনি আরও বলেন, ‘আমি কর্তৃপক্ষকে তাদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছি, তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অধিকার নিশ্চিত করবে এবং অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকবে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য বিরোধী মতকে সম্মান করা গুরুত্বপূর্ণ।’
বাংলাদেশ সময়: ১২:৩৩:৩৩ ১২৩ বার পঠিত