বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস ঢাকায় কর্মরত জাতিসংঘের কর্মকর্তাসহ বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। মন্ত্রী বলেন, বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী সবসময় সজাগ থাকবে বলে জানিয়েছি।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নিজ দপ্তরে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস এর সাঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের মধ্যে খুবই সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। তিনি জানতে চেয়েছিলেন, জাতিসংঘসহ অন্যান্য বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তার জন্য আমরা কী পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা বলেছি, জনগণের নিরাপত্তা দেওয়াই আমাদের কাজ। পাশাপাশি, বিদেশি যারা আছেন, তাদের অগ্রাধিকার দিয়েই ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা এও বলেছি, যদি আপনি(গোয়েন লুইস) মনে করেন, আপনার নিরাপত্তা আরও বাড়াতে হবে, তাহলে আপনি আমাদের জানালেই সেই বিষয়টি বিবেচনা করবো।
একক্ষেত্রে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে যেতে হয় বলে জানিয়েছেন গোয়েন লুইস। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি বলেছেন, আমাদের তো একটি লম্বা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, প্রথমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তারপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। আমরা তাদের একটি সহজ পদ্ধতি বলে দিয়েছি যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে আমাদের কাছে সেটির একটি অনুলিপি দিলেই আমরা পদক্ষেপে যাবো। আমরা তাকে বলেছি, বাংলাদেশে নির্বাচন একটি আনন্দঘন পরিবেশে হয়, সবখানে আপনি দেখবেন, সবাই উৎস্যুক হয়ে অপেক্ষা করছেন, যখন থেকে প্রচার-প্রচারণা শুরু হবে, তখন থেকে ঢাকঢোল পিটিয়ে মিছিল দেখতে পাবেন। এটা কেবল বাংলাদেশই না, পুরো উপমহাদেশেই এমনটি ঘটে আসছে।
তবে কূটনীতিকদের অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের নিরাপত্তায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী সবসময় সজাগ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী সবসময় সজাগ থাকবে, যাতে কোনো কেউ কোনো রকম নাশকতা কিংবা ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে। বিদেশি কূটনীতিকরা মুক্তভাবে চলাচল করতে পারবে কিনা, জানতে চাইলে আমরা বলেছি, যেখানেই যেতে চান, যেতে পারেন। যদি তিনি মনে করেন, সহযোগিতার দরকার আছে, আমরা সেটা করবো।
এরপরে রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ রক্তপাত নিয়ন্ত্রণে আমরা যে পুলিশি পদক্ষেপ নিয়েছি, তাতে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটার ব্যাপারে আরও একটু সতর্ক হওয়ার ব্যাপারে আমাদের বলেছেন। আমরা বলেছি, নাফনদীর ওইপাড়ে মিয়ানমারের সীমান্ত। কিছুটা দুর্গম পথ রয়েছে, বাকিটা সহজ। যে কারণে তারা প্রবেশ করতে পারছে। আমরা দেখছি, মিয়ানমারের সঙ্গে আরাকান আর্মির যুদ্ধ চলছে। চেহারা একইরকম হওয়ায় আমাদের এখানে আরাকান আর্মিরা ঢুকে পড়ে, আমরা দেখেছি। সে কারণে মাঝেমাঝে দুয়েকটা ঘটনা ঘটছে। আমরা বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে আরও সতর্ক থাকতে বলেছি, যাতে তারা না ঢুকতে না পারে।
তিনি বলেন, আমি তাদের বলেছি, রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সীমান্তের পাশেই থাকে। আমরা ভাসানচরে একটা সুন্দর আবাসনের ব্যবস্থা করেছি। সেখানে এক লাখ মানুষ থাকতে পারে। একটি সুন্দর এলাকা তৈরি করে দিয়েছি। তখন তিনি সেখানে মেডিকেল ইভাকুয়েশন সিস্টেম তৈরি করতে বলেছেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমি বলেছি, আমাদের কোস্টগার্ড সেখানে সবসময় তৈরি থাকে। যে কোনো প্রয়োজনে তারা প্রস্তত থাকে। আরও দ্রুত কীভাবে সেখান থেকে মেডিকেল ইভাকুয়েশন করা যায়, তারা সে সম্পর্কে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেই পরামর্শ অনুসারে কাজ করবো বলে, তাকে জানিয়ে দিয়েছি। তিনিও স্বীকার করেছেন, ভাসানচরে থাকলে রোহিঙ্গারা নিরাপদে থাকবে। তিনি আরও বলেছেন, আমাদের অভ্যন্তরীণ বিদেশিরা পার্বত্য চট্টগ্রামের দিকে যেতে চাচ্ছে। আমি তাদের বলেছি, আমাদের একটি নীতিমালা আছে, সেই অনুসারে তাদের সেখানে যাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:১৩:৩৬ ১০৬ বার পঠিত #নির্বাচন ২০২৪