জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সিগারেট কোম্পানির ই-সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে এর প্রসারের উদ্যোগ অবশ্যই জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম সংকটের কারণ হতে পারে।
গণমানুষের কথা চিন্তা করে তারা অতিদ্রুত ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার আহবান জানিয়েছেন।
বক্তারা আজ শনিবার বিকেল ৩ টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির (ডিঅরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানান।
বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত ২২টি সংগঠন যৌথভাবে ‘ই-সিগারেট/ভেপিং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি ঃ নিষিদ্ধ জরুরি’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এই সংবাদ সম্মেলনে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেন, সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন’র সংশোধনী প্রস্তবে ই-সিগারেটের প্রচার, প্রসার, আমদানি, রপ্তানি, পরিবেশন, বিপণন নিষিদ্ধের প্রস্তাব দেওয়ার পর কয়েকটি বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানি বিভিন্ন উপায়ে দেশে অত্যন্ত ক্ষতিকর এ পণ্যের প্রচারে নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করছে।
বক্তারা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিদেশী সিগারেট কোম্পানি বিএটি সম্প্রতি বাংলাদেশে ভোক্তাদের আধুনিক জীবনধারার কথা উল্লেখ করে নতুন কিছু আর্ন্তজাতিক মানের পণ্যের আমদানি করার অনুমতি চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়েছে। এ ধরণের পণ্যের চাহিদা নিরুপণে বাংলাদেশের বাজারে এসকল পণ্য বিক্রয় করা এবং পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে এ পণ্যের উৎপাদন, পরিবেশন, বিপণন ও রপ্তানি করার ইচ্ছে প্রকাশ করা হয়েছে। ‘তাদের এই ধরনের প্রচেষ্টা দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়’ এ কথা উল্লেখ করে তামাক বিশেষঙ্গরা বরেন, গণমানুষের কথা চিন্তা করে অতিদ্রুত ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি বিশিষ্ট ক্যান্সার বিষেশজ্ঞ ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক সিগারেট কোম্পানির মিথ্যাচার নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কম ক্ষতিকর টার্ম ব্যবহার করে তামাক কোম্পানিগুলো তরুণ-যুবক এবং ধূমপায়ীদের ই-সিগারেটে আকৃষ্ট করছে। ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর নয়, বরং খুবই ক্ষতিকর একটি পণ্য। ই-সিগারেটের ব্যবহার ও বাজার সম্প্রসারণের জন্য কোম্পানিগুলো ভ্যাপিং উৎসবের আয়োজন করছে, যা যুব সমাজকে নতুন ভাবে অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী এর স্বপক্ষে বিভিন্ন মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের এপিডেমোলজি বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়ায় ই-সিগারেট বন্ধের সুপারিশ করেছে। দেশের প্রায় ১৫০ জনের বেশি সংসদ সদস্য ই-সিগারেট বন্ধের সুপারিশ করেছে এবং সরকার তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে।
এ ছাড়াও ঢাকা আহসানিয়া মিশনের পরিচালক (হেলথ এন্ড ওয়াস) ইকবাল মাসুদ এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা গবেষণা’র উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একটি বিদেশী সিগারেট কোম্পানি বিএটি ই-সিগারেট প্রসারের লক্ষ্যে গোপনে কাজ করছে এবং ঢাকায় তাদের সহযোগিতায় পরিচালিত প্রায় ৩০ টিরও বেশি ই-সিগারেট’র দোকান পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১:৪৪:৩৮ ১১৯ বার পঠিত