শীত এলেই ঘরে ঘরে পিঠা তৈরির ধুম পড়ে যায়। খেজুরের রস এবং গুড় দিয়ে পিঠা এ যেন সব বাঙালির জন্য অমৃত। শীতের শুরুতেই বাজারে গুড় উঠতে শুরু করে। এ সময় গুড়ের ঘ্রাণ মুগ্ধ করে সবাইকে।
শুধু স্বাদেই নয়, গুড়ের আছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতাও। এ কারণে চিনির বদলে গুড় খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। শীতের পিঠা, পায়েসসহ মিষ্টি যেকোনো খাবারে এটি ব্যবহার করা হয়। তবে আপনি যে গুড় খাচ্ছেন তা আসল নাকি নকল, তা বুঝে খান। কেননা বাজার থেকে গুড় কিনতে গিয়ে আমরা অনেকেই ঠকে আসি। তাই গুড় কেনার সময় কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখুন-
গুড় কেনার সময় একটু ভেঙে চেখে দেখুন। নোনতা স্বাদের হলে বুঝবেন এ গুড়ে ভেজাল আছে, এটি না কেনায় ভালো।
গুড়ের ধার দুই আঙুল দিয়ে চেপে দেখুন। যদি নরম লাগে বুঝবেন ভালো মানের গুড় আর বেশি শক্ত হলে না কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ।
কেমিক্যালবিহীন গুড়ের রং কালচে কিংবা গাঢ় বাদামি। গুড়ের রং যদি সাদা, হলুদ কিংবা লাল হয়, তাহলে বুঝতে হবে তাতে কেমিক্যাল মেশানো আছে।
কৃত্রিম চিনি মেশানো গুড় দেখতে খুব চকচকে হয়। এটি কিনবেন না।
এছাড়া আপনি চাইলে গুড় আসল নাকি ভেজাল আছে পরীক্ষা করতে পারেন। চলুন জেনে নিই আপনি কীভাবে গুড় পরীক্ষা করবেন-
গুড় কতটা শুদ্ধ তা পরখ করতে এতে ২০ ফোঁটা কংসেনট্রেটেড হাইড্রোলিক অ্যাসিড মিশিয়ে নিন। এর পর গুড়ের রং যদি গোলাপী হয়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে এটি নকল। এতে রাসায়নিক মেশানো আছে।
এছাড়া এক গ্লাস পানিতে এক টুকরা গুড় নিয়ে মেশান। যদি এটি পানিতে মিশে যায় তাহলে সেটি আসল গুড়। আর যদি পানির নিচে অবশিষ্ট জমে থাকে তাহলে বুঝতে হবে গুড়ে ভেজাল আছে।
গুড়ের স্বাস্থ্য উপকারিতা
চিনির চেয়ে অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর খেজুর গুড়। এতে রয়েছে ফসফরাস, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম জাতীয় খনিজ।
চায়ে চিনির বদলে গুড় খেলে হজম শক্তি বাড়ে।
গুড়ে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্টস ও মিনারেলস আছে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন ইনফেকশন প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও বাড়ায় গুড়।
ঠান্ডাজনিত অ্যালার্জি থেকে দূরে রাখে খেজুর গুড়।
গুড় ওজন কমাতে সাহায্য করে।
খেজুর গুড়ে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এটি ত্বক সতেজ রাখে।
শরীর থেকে যাবতীয় দূষিত পদার্থ বের করে শরীর পরিষ্কার রাখতে সাহায্য় করে। এমনকি সর্দি-কাশির সমস্যাও দূর করে।
গুড় মেশানো পানিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি, গ্লুকোজ, সুক্রোজ, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস।
আরও পড়ন: ফ্রিজ ছাড়া খাবার সংরক্ষণের উপায়
হালকা গরম পানিতে গুড় মিশিয়ে পান করলে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করা যায়। এছাড়া সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যও দারুণ উপকারী গুড়ের পানি।
শীতকালে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার সমস্যায় যারা ভোগেন তাদের জন্যও উপকারী গুড়ের পানি।
গুড়ে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় অ্যানিমিয়ার রোগীদের জন্য দারুণ উপকারী। এমনকি রক্ত পরিশুদ্ধ রাখতেও দারুন সাহায্য করে গুড়।
বাংলাদেশ সময়: ১০:০২:৫২ ৮২ বার পঠিত