পিছিয়ে পড়েও ডিক্লান রাইসের শেষ মুহূর্তের গোলে লুটনের বিপক্ষে মঙ্গলবার ৪-৩ ব্যবধানে লড়াকু এক জয় নিশ্চিত করেছে আর্সেনাল। এই জয়ে প্রিমিয়ার লিগ টেবিলে পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে গেছে শীর্ষে থাকা গানার্সরা।
গোলরক্ষক ডেভিড রায়ার দুই ভুলে মিকেল আর্তেতার দল কেলিনওয়ার্থ রোর্ডে বিরতির পরপর ৩-২ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল। কিন্তু আর্সেনাল কেই হাভার্টজের গোলে সমতা ফেরানোর পর স্টপেজ টাইমে রাইসের গোলে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।
এই জয়ের পর আর্তেতা ও তার খেলোয়াড়দের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাস এটাই প্রমান করে যে ২০০৪ সালের পর প্রথমবারের মত লিগ শিরোপা জয়ে আর্সেনাল কতটা মরিয়া।
ম্যাচ শেষে আর্তেতা বলেছেন, ‘আমি অত্যন্ত খুশী। আমরা জানতাম এটা একটি বড় লড়াই। আমরাই ম্যাচটিকে কঠিন করে তুলেছিলাম। ওভাবে গোলগুলো হজম করা ঠিক হয়নি। যেভাবে আমরা লড়াই করেছি তাতে সঠিক সময়ে আমরা নিজেদের প্রমান করেছি। কখনই আমরা ম্যাচ ছেড়ে দেইনি। আজ আমরা পরিশ্রমের ফল পেয়েছি। লুটনকেও অভিনন্দন। তারা আমাদের জন্য পুরো ম্যাচটা কঠিন করে তুলেছিল। আমি তাদের সাথে কথা বলেছি। তারাও এই পারফরমেন্সে দারুন খুশী।’
আর্সেনালের হয়ে গোলের খাতা খোলেন গাব্রিয়েল মার্টিনেলি। লুটনের হয়ে গাব্রিয়েল ওশো সমতা ফেরান। গাব্রিয়েল জেসুস বিরতির ঠিক আগে আবারো সফরকারীদের এগিয়ে দেন। বিরতির পর রায়ার ভুলে এলিজাহ আদেবায়ো লুটনের হয়ে দ্বিতীয়বার সমতা ফেরান। কিছুক্ষন পর আবারো স্প্যানিশ গোলরক্ষক রায়ার কারনে রস বার্কলি প্রথমবারের মত লুটনকে এগিয়ে দেন। কিন্তু ইংলিশ মিডফিল্ডার রাইস শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে আর্সেনালকে তিন পয়েন্ট উপহার দিয়েছেন। এনিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় টানা ষষ্ঠ ম্যাচে জয় তুলে নিল গানার্সরা।
গত মৌসুমের শুরু থেকেই আর্তেতার অধীনে আর্সেনাল নিজেদের ভিন্নভাবে প্রমান করে চলেছে। এই সময়ের মধ্যে ১৭টি এ্যাওয়ে ম্যাচে তারা জয়ী হয়েছে। এই একই ভেন্যুতে ১৯৮৪ সালে প্রথম জয় পেয়েছিল আর্সেনাল। ৩২ বছর পর প্রথমবার কেনিলওয়ার্থ সফরে এসে গানার্সরা জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।
২০ মিনিটে ডান দিক থেকে বুকায়ো সাকার লো ক্রস থেকে মার্টিনেলি ১২ গজ দুর থেকে কোনাকুনি শটে আর্সেনালকে এগিয়ে দেন। পাঁচ মিনিট পর ওশোর হেডে সমতায় ফিরে লুটন। প্রিমিয়ার লিগে ইংলিশ এই ডিফেন্ডারের এটাই প্রথম গোল। বেন হোয়াইটের ক্রসে ৪৫ মিনিটে জেসুস আবারো আর্সেনালকে এগিয়ে দেন।
বিরতির পরও লুটনের সেট পিস থেকে আক্রমনের ধার বজায় ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ৪৯ মিনিটে আলফি ডটির কর্ণার থেকে আদেবায়ো দারুন এক হেডে রায়াকে পরাস্ত করেন। অথচ রায়া সহজেই বলটি নিজের নিয়ন্ত্রনে নিতে পারতেন।
রব এডওয়ার্ডসের দল সেট-পিস থেকে এবারের লিগে সবচেয়ে বেশী গোল করেছেন। প্রায় ৫০ শতাংশ গোল এসেছে ফ্রি-কিক, কর্ণার ও পেনাল্টি থেকে। ৫৭ মিনিটে রায়ার আরো এক ভুলে এবার এগিয়ে যায় লুটন। লো শটে সাবেক চেলসি মিডফিল্ডার বার্কলি রায়ার দূর্বলতার সুযোগে লুটনকে এগিয়ে দেন। মার্টিন ওডেগার্ডের ক্রসে দারুন এক হেডে রাইস ইনজুরি টাইমের সপ্তম মিনিটে আর্সেনালকে লড়াকু জয় উপহার দেন। তার আগে হাভার্টজ আর্সেনালের হয়ে সমতা ফিরিয়েছিলেন।
দিনের আরেক ম্যাচে মলিনেয়াক্সে হুয়াং হি-চ্যানের গোলে উল্ফস ১-০ ব্যবধানে বার্নলিকে পরাজিত করেছে। ৪১ মিনিটে মাথিয়াস কুনহার এ্যাসিস্টে হুয়াং জয়সূচক গোলটি করেন। মৌসুমের এটি হুয়াংয়ের নবম গোল।
গত ৯ ম্যাচে অষ্টম পরাজয়ের বার্নলি এখনো টেবিলের তলানির দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এদিকে আগস্টের পর প্রথমবারের মত কোন গোল হজম না করা বার্নলি টেবিলের ১২তম স্থানে উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:০১:৩১ ১০৭ বার পঠিত