বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩

রূপগঞ্জে রংধনুর রফিকের নির্দেশে শিশুহত্যার অভিযোগ

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » রূপগঞ্জে রংধনুর রফিকের নির্দেশে শিশুহত্যার অভিযোগ
বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩



রূপগঞ্জে রংধনুর রফিকের নির্দেশে শিশুহত্যার অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নামমাত্র মূল্যে বসতভিটা বিক্রি না করার জেরে শিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তাঁর ভাই মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। ওসমান গণি স্বাধীন নামে ৯ বছর বয়সী ওই শিশুর পরিবার আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিশুটির পরিবারের দাবি করে, হত্যার পর শিশুটির মরদেহ যাতে শনাক্ত করা না যায় সেজন্য মুখ থেঁতলে ও এসিডে শরীর ঝলসে দেওয়া হয়। গুম করতে লাশ ফেলে দেওয়া হয় বালু নদীতে।
পরে পরনের প্যান্ট দেখে স্বজনরা ওসমানকে শনাক্ত করেন।

শিশুটির বাবা শাহিনুর রহমান বলেন, ‘রফিক এলাকায় প্রভাবশালী। তাঁর বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী আছে। এ কারণে হত্যার পরিবর্তে অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে রূপগঞ্জ থানা-পুলিশ।
হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে শিশুটির বাবা ছাড়াও মা উম্মে হানি মুন্নী ও দাদা রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন। তারা নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া গ্রামের বাসিন্দা।

শাহিনুর রহমান বলেন, ‘গত ৪ ডিসেম্বর ইদারকান্দি গ্রামে নির্মাণাধীন ব্রিজের নিচে বালু নদী থেকে ৯ বছরের একটি শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
আমি সেই শিশুটির হতভাগ্য পিতা। আমার অবুঝ সন্তানের মৃত্যুটি স্বাভাবিক ছিল না, তাকে নৃশংসভাবে খুন করে লাশ গুম করার উদ্দেশে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।’

প্রভাবশালীর নির্দেশে শিশু স্বাধীনকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে শাহিনুর বলেন, ‘আমার সন্তানের হত্যাকারী আমাদের ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও রংধনু গ্রুপের মালিক রফিকুল ইসলাম ও তাঁর ভাই মিজানুর রহমান। তারা এত প্রভাবশালী যে, সন্তানকে কবর দেওয়ার পর আমরা বাড়িতে থাকতে পারি না।’

সন্তানের হত্যাকান্ড নিয়ে কথা বললে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে জানিয়ে শাহিনুর বলেন, ‘বাড়িতে পাহারা বসিয়েছে।
নিজেদের জীবন বাঁচাতে বাড়ি থেকে আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি। সন্তান হত্যার বিচার পেতে আমরা মামলাও করতে পারিনি, থানা-পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে মামলা না দিয়ে অপমৃত্যুর মামলার পরামর্শ দেয়।’

হত্যাকাণ্ডের কারণ প্রসঙ্গে শাহিনুর বলেন, ‘রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম গত ২ মাস আগে আমাদের বাড়ি নামমাত্র দামে কিনতে তাঁর বোনকে পাঠান। সঙ্গে আরেকজন মহিলাও ছিল। বাড়িটি রফিকুল ইসলাম কিনতে চান বলে তাঁরা জানালে আমার বাবা রেজাউল করিম মানা করে দেন। বাড়ি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় একাধিকবার আমাদের বাড়িতে হামলা করেছে। একটি মুদি দোকানও বন্ধ করে দিয়েছে। এরপরও আমরা বাড়িটি বিক্রি করতে রাজি হইনি।’

শাহিনুর বলেন, ‘আমার সন্তানকে হত্যার এক সপ্তাহ আগে রফিকুলের ভাই মিজানুর রহমান উচিত শিক্ষা দেবেন বলে বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে যান। ঠিক এক সপ্তাহ পরে আমার সন্তানটি নিখোঁজ হয়। এরপর আমরা স্বাধীনের বীভৎস লাশ পাই। রফিকুল ইসলাম আমার জায়গার জন্য এমন জঘন্য কাজ করবেন, সেটা বুঝতে পারলে অনেক আগেই বাড়িটা দিয়ে দিতাম।’

সংবাদ সম্মেলনে শাহিনুর বলেন, ‘উদ্ধারের পর আমার সন্তানের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়ি নিয়ে আসি। বাড়িতে এসে দেখি রফিকুলের লোকজন হুজুর নিয়ে অপেক্ষা করছে। বাড়িতে গাড়ি আসার পর তারা স্বাধীনের কাছে আর আমাদের যেতে দেয়নি। আমার সন্তানের মরদেহটাও শেষবারের মত কাউকে দেখতে দেয়নি। রফিকুল ইসলামের নির্দেশে পরিবারের অনুমতি না নিয়েই রাতের অন্ধকারে আমার শিশুটিকে কবর দেয়।’

শিশুটির দাদা রেজাউল করিমও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। উপস্থিত স্বজনরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫২:১০   ১৬১ বার পঠিত