মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩

লোকসভা থেকে আরও ৪৯ এমপি বহিষ্কার

প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » লোকসভা থেকে আরও ৪৯ এমপি বহিষ্কার
মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩



লোকসভা থেকে আরও ৪৯ এমপি বহিষ্কার

ভারতীয় লোকসভা থেকে শিষ্টাচার বহির্ভূতভাবে সংসদের অভ্যন্তরে প্রতিবাদ করার অভিযোগে আরও ৪৯ জন সংসদ সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা তাদের বহিষ্কার করেন।

গত সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) একইভাবে অভিযুক্ত হয়ে বহিষ্কৃত হন ৭৮ জন সংসদ সদস্য। সবমিলিয়ে তিন দিনে ১৪১ জন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যকে চলতি শীতকালীন অধিবেশন থেকে বহিষ্কার করা হলো।

ভারতের লোকসভায় মোট সংসদ সদস্য ৫৪৩ জন। এর মধ্যে চলমান লোকসভায় বিজেপি বা তাদের শরিক দল মিলিয়ে ৩৩৬ জন সংসদ আছেন। বিপরীতে কংগ্রেস বা বিজেপি বিরোধী শিবিরে রয়েছেন ২০৬ জন এবং নির্দলীয় হিসেবে নির্বাচিত হয়ে সংসদে আছেন ১১৩ জন সদস্য।

তিন দিনে বিজেপি বিরোধী প্রায় ছটি রাজনৈতিক দলের সংসদ সদস্যদের এভাবে গণহারে বহিষ্কারের ঘটনা ভারতের সংসদীয় ইতিহাসে নজিরবিহীন এবং বিরলতম বলে দাবি করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, একদিকে এই ধরনের প্রতিবাদ করা যেমন বিরল তেমনি প্রতিবাদের কারণে একসঙ্গে এতজন সংসদ সদস্যকে পুরো অধিবেশন থেকে বহিষ্কার করাও নজিরবিহীন।

মঙ্গলবার যে ৪৯ জন সংসদ সদস্যকে বহিষ্কার করা হয় তাদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসেরও বেশ কয়েকজন রয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন বর্ষীয়ান সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

গত ১৩ ডিসেম্বর লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন সময়ে কয়েকজন প্রতিবাদকারী স্মোক বোমা নিয়ে হামলা চালালে গোটা সংসদের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড়ো প্রশ্ন ওঠে।

এই ঘটনায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র বিবৃতি এবং তাকে পদত্যাগের দাবি তোলেন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্ব। একইসঙ্গে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিবৃতিও দাবি করেন তারা।

ঘটনার পরপরই সংবাদমাধ্যমে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক কাঁদা ছড়াছড়ি না করার অনুরোধ জানিয়ে বিরোধীদলকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। এমনকি ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও লোকসভা অধিবেশনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বিষয়টি যথাযথভাবে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।

মূলত ওই ঘটনা নিয়ে সোমবারই লোকসভায় বিবৃতি দিচ্ছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতা ও দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার বিবৃতি চলাকালীন সময়ে বিরোধীদলের সংসদ সদস্যরা তুমুল হট্টগোল এবং চিৎকার চেঁচামেচি করেন। এরপরই শুরু হয় এই গণ-বহিষ্কারের কর্মসূচি।

এদিকে মঙ্গলবার লোকসভা শীতকালীন অধিবেশন চলার সময় যারা গতকালকে বহিস্কৃত হয়েছিলেন সেইসব বহিষ্কৃত সংসদ সদস্যরা লোকসভা ভবনের ভেতরে প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় সেখানে তৃণমূল এবং কংগ্রেসের বহিষ্কৃত সংসদ সদস্যরা ছিলেন।

প্রসঙ্গত, আগামী বছর এপ্রিল মে মাসে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। এর আগে সম্প্রতি তিনটি বিধানসভায় বিজেপির নজিরবিহীন সাফল্য এবং বিরোধী শিবিরের পরাজয়ে বিজেপি শিবিরের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়। রাজনৈতিক মহলের দাবি, লোকসভা নির্বাচনের আগে সরকারের শেষ সময় আরও কঠোরভাবে ভারতীয় লোকসভা এবং রাজ্যসভা চালানোর দিকেই এগোচ্ছে বিজেপি শাসিত সরকার।

এদিকে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় একের পর এক বিরোধী শিবিরের সংসদ সদস্যরা যখন বহিষ্কৃত হচ্ছেন ঠিক সেদিনই রাজধানী দিল্লিতে বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের চতুর্থ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে এই বৈঠকে কংগ্রেস তৃণমূলসহ আরও ২৬টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা যোগ দেবেন। লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের এই জোটের আসন বণ্টন ইসুতে এদিন খসড়া চূড়ান্ত হতে পারে বলে দাবি করছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪৪:২২   ৭৭ বার পঠিত