জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে এক বিধবার বসতভিটা দখলের অপচেষ্টা করছে আসাদুল্লাহ নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। এঘটনা উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বগারপাড় বড় পুকুর এলাকায় ঘটেছে।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২৫ বছর পূর্বে বগারপাড় গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিম তরফদারের ছেলে আসাদুল্লাহ ও আনোয়ার হোসেন তরফদার পোগলদিঘা বিন্যাফৈর মৌজার ১২ শতাংশ জমি ৯০ হাজার টাকায় একই গ্রামের মৃত শামছুল হকের স্ত্রী মতবানু কাছে বিক্রি করেন।
মতবানু ওই জমির সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করে জমি দলিল করে দিতে বললে তারা জানান জমির দলিলাদি ব্যাংকে জমা আছে। এখন তারা জমিটি দলিল করে দিতে পারবেন না। পরে এ বিষয়টি মতবানু এলাকাবাসীকে জানিয়ে জমির দাতাগণের উপস্থিতিতে ওই জমিতে ঘর তুলে বসবাস করে আসছিলেন।
দীর্ঘ ২৫ বছর পর মতবানুর সন্তানেরা ওই জমির দলিল করে দিতে বললে জমির অংশীদার আসাদুল্লাহ জানায় সে তাদের কাছে কোন জমি বিক্রি করেননি এবং টাকাও নেননি।
পরে মতবানুর সন্তানেরা নিরুপায় হয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশ বসান। সেই সালিশিতে আসাদুল্লাহ টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে উল্টো মতবানুর বিরুদ্ধে তাঁর জমি বেদখলের অভিযোগ তুলেন এবং মামলা করার হুমকি দেন।
এদিকে আসাদুল্লাহ সহদর ভাই আনোয়ার হোসেন তরফদার বলেন, এই জমিটি আমরা দুই ভাই মিলেই বিধবা মতবানুর কাছে বিক্রি করেছি এবং টাকা নিয়েছি। জমির দলিলাদি ব্যাংকে থাকার কারণে আমরা তখন জমিটি দলিল করে দিতে পারিনি। এখন ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করে দলিলাদি ফেরত এনেছি। তাই আমার অংশটুকু আমি দলিল করে দিতে চাচ্ছি কিন্তু সে তার অংশটুকু দিতে চাচ্ছে না। উল্টো অসহায় পরিবারটিকে মামলা দিয়ে সে হয়রানি করছে। এটি একটি অমানবিক কাজ বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে আসাদুল্লাহর ভাতিজা রাশেদুল ইসলাম তাঁরা বলেন,আমার চাচা বিধবা মতবানুর কাছ থেকে জমির বিক্রির নামে টাকা নিয়েছেন। কিন্তু লিখে দেননি। এটা আমরা আত্মীয়-স্বজন সকলেই জানি। আজ যেটা সে করছে সেটা অমানবিক অন্যায় ও অবিচার।
এছাড়াও আসাদুল্লাহর ভাবি চায়না বেগম জানান, আমরা একসাথেই জমি বিক্রির টাকা নিয়েছি। আজ আমাদের অংশটুকু লিখে দিতে চাচ্ছি কিন্তু সে তার অংশটুকু দিবে না। এটা গরিবের সাথে অবিচার ছাড়া আর কিছু নয়।
এলাকাবাসী হিসেবে মনির হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী নারী আমার প্রতিবেশী। আজ দীর্ঘ ৩০ বছর পূর্বে তার স্বামী মারা যায়। তাদের কোন সহায় সম্বল ছিল না। পরের বাড়িতে বসবাস করে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কাজ করে দুটি সন্তান লালন পালন করে এবং কষ্ট করে এই জমিটুকু কিনেন।
আমরা জানি, আসাদুল্লাহ এই জমির উপর টাকা নিয়ে জমি দখল দিয়েছেন কিন্তু দলিল করে দেননি। আজ দীর্ঘ ২৫ বছর পর জমি বিক্রির কথা অস্বীকার করে উল্টো এ অসহার পরিবারটির বিরুদ্ধে জমি বেদখলের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন তিনি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি প্রশাসনের কাছে দাবী জানাচ্ছি এই অসহায় পরিবারটিকে জুলুমকারীর হাত থেকে বাঁচাতে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৪৫:৫৩ ১৮৪ বার পঠিত