আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠিত হওয়ার বিষয়ে আশা প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নসরুল হামিদ বলেন, আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হতে পারে। আর আমার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা।
তিনি বলেন, সারাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। আর ৪০ শতাংশ ভোট অনেক যথেষ্ট। সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে নির্বাচন কমিশন প্রচণ্ড চাপে ছিল। তারা খুব পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিরোধী দল প্রসঙ্গে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, সংবিধান অনুযায়ী বিরোধী দল হবে জাতীয় পার্টি।
এর আগে রোববার দিনগত রাত ৪টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন থেকে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ২৯৮টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগ পেয়েছে সর্বোচ্চ ২২৩টি আসন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা, যাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। এ পর্যন্ত ৬১টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
গত দুই সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে জাতীয় পার্টি এবার পেয়েছে মাত্র ১১টি আসন। যে ২৬টি আসনে তারা আওয়ামী লীগের কাছে ছাড় পেয়েছিল তার অনেকগুলোতেই জামানত হারিয়েছে।
এর বাইরে আওয়ামী লীগেরই নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টি একটি করে আসন পেয়েছে। এ ছাড়া বিএনপি জোট থেকে বেরিয়ে আসা কল্যাণ পার্টি একটি আসনে জয় পেয়েছে।
এর আগে, রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারাদেশে ২৯৯টি আসনে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে। এ সময়ে কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্ন গোলযোগ হয়েছে। ৩০ থেকে ৩৫ জায়গায় ভোটকেন্দ্রের বাইরে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়েছে। কোথাও ভোটকেন্দ্রের পাশে ককটেল বিস্ফোরণেরও ঘটনা ঘটেছে। অনিয়মের কারণে সাতটি কেন্দ্রে ভোট বাতিল করা হয় এবং জাল ভোটে সহায়তা করার জন্য ১৫ ব্যক্তিকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কারচুপি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী।
এবার নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৭ লাখ। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন পুরুষ, ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন নারী এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৫২। মোট ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি। ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি। ভোট হচ্ছে ব্যালট পেপারে।
ইসির দেওয়া তথ্যমতে, নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ভোট হয়েছে ২৯৯ আসনে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। নির্বাচনে ২৮টি দল অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৫৩৪ জন এবং স্বতন্ত্র ৪৩৬ জন। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ২৬৬ জন প্রার্থী ছিল আওয়ামী লীগের। এ ছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬৫ জন প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩৫ জন প্রার্থী রয়েছেন ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে আসা তৃণমূল বিএনপি।
এদিকে বিএনপিসহ ৬০টি দল নির্বাচন বর্জন করেছে। দলটি সরকার পতনের এক দফা দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে সফলতা না পেয়ে নির্বাচনের দুই মাস আগ থেকে হরতাল-অবরোধের পথ বেছে নেয়। এতে সরকারকে চাপে ফেলতে না পেরে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ ডাক দেয় দলটি। পাশাপাশি সরকারকে সকল প্রকার কর, খাজনা, পানি, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিল দেওয়া স্থগিত রাখার অনুরোধ জানায় দলটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:০৯:০২ ৭৪ বার পঠিত