জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে গ্রিনল্যান্ডের বরফ স্তর থেকে পূর্বের ধারণার চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি গলে গেছে।
নেচার জার্নালে বুধবার প্রকাশিত গবেষণা রিপোর্টে একথা জানানো হয়। গত চার দশক ধরে স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে হিমবাহের এই বরফ গলনের চিত্র পাওয়া যায়।
পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গেছে, গত দুই দশকে গ্রীনল্যান্ডের বরফের স্তর থেকে প্রায় ৫ হাজার গিগাটন বরফ গলে গেছে, যা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে একটি প্রধান ভূমিকা রাখছে।
নতুন গবেষণায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা ১৯৮৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত হিমবাহের গলন অবস্থানের প্রায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার স্যাটেলাইট চিত্র সংকলন করেছেন। সেখানে হিমবাহগুলো সমুদ্রের সাথে মিলিত হয়েছে।
গবেষণা রিপোর্টের প্রধান লেখক, নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির একজন হিমবিজ্ঞানী চ্যাড গ্রিন এএফপি’কে বলেছেন, ‘গত কয়েক দশক ধরে গ্রিনল্যান্ডের প্রায় প্রতিটি হিমবাহ পাতলা হয়ে গেছে বা সরে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘সত্যিই কোন ব্যতিক্রম নেই এবং এটি একযোগে সর্বত্র ঘটছে।’
গবেষকরা দেখেছেন, গ্রীনল্যান্ডের প্রান্তের চারপাশে ১ হাজার গিগাটন (১ গিগাটন সমান ১ বিলিয়ন টন), বা ২০ শতাংশ বরফ যা গত চার দশক ধরে গলে গেছে এবং আগে এই হিসেব করা হয়নি।
নেচার জার্নালে গবেষকরা বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক দশকে গ্রীনল্যান্ডের বরফের স্তর আগের ধরণার চেয়ে বেশি গলে গেছে।’
যেহেতু দ্বীপের প্রান্তে বরফ ইতোমধ্যেই সমুদ্রে মিশেছে, লেখকরা জোর দিয়েছেন এটি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সরাসরি প্রভাব ফেলবে।
এখানে আরও সামগ্রিক বরফ গলে যেতে পারে। যার ফলে হিমবাহগুলো আরও সহজেই সমুদ্রের দিকে পিছলে যেতে পারে।
গবেষকরা দেখেছেন, গ্রীনল্যান্ডের হিমবাহগুলো ঋতু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীল, যা শীতকালে প্রসারিত হয় এবং গ্রীষ্মে পিছিয়ে যায়। এছাড়াও বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবের জন্য সবচেয়ে সংবেদনশীল এবং ১৯৮৫ সাল থেকে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে এই পরিবর্তন ঘটছে।
অ্যান্টার্কটিকার পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হিমবাহ, গ্রীনল্যান্ডের বিশাল বরফের স্তর গলে যাওয়া ২০০২ সাল থেকে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে ২০ শতাংশের বেশি অবদান রেখেছে বলে অনুমান করা হয়।
সমুদ্র পৃষ্ঠের ক্রমবর্ধমান উচ্চতা বৃদ্ধি উপকূলীয় এবং দ্বীপ অঞ্চলগুলোতে প্লাবনের হুমকি সৃষ্টি করছে। এসব অঞ্চলে লাখ লাখ লোক বাস করে। সমগ্র দ্বীপ দেশগুলো এবং সমুদ্রের তীরের শহরগুলোকে ডুবিয়ে দিতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৩:৫৪ ৭৫ বার পঠিত