প্রকল্পের ক্ষেত্রে বিদেশি ঋণের অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে সভা শেষে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আব্দুস সালাম এমন কথা জানিয়েছেন।
দীর্ঘ ৮ বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিদেশি অর্থায়নে প্রকল্পগুলো দুই মাস অন্তর অন্তর পর্যালোচনা করতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের ক্ষেত্রে বিদেশি ঋণের অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম বলেন, যারা (বিদেশিরা) প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে তাদের কী স্বার্থ নেই? তারা কী নিঃস্বার্থভাবে প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে নাকি? তারা কী ঋণের বদলে ইন্টারেস্ট পাচ্ছে না? তবে প্রকল্প যেন সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হয় এটা আমরাও চাই, তারাও (বিদেশিরা) চায়। প্রকল্প বাস্তবায়নে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি যাতে ভালো হয় এইসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রকল্পে অর্থছাড় তাড়াতাড়ি করা হবে। এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন,
প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যাচাই বাছাই করতে আরও জোর দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্প পরিচালকদের দক্ষতা বাড়ানোর তাগিদও দিয়েছেন। একটি পুল গঠন করে বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করে; পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। কোনোভাবে প্রকল্প বিলম্ব করা যাবে না। যথাসময়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। অর্থের ছাড়ও যথাসময়ে দিতে হবে।
ফিজিবিলিটি স্টাডি প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন,
প্রকল্প বাস্তবায়নে ফিজিবিলিটি স্টাডি করতে হবে। এটা শক্তিশালী করতে হবে। সময় ও খরচ যাতে না বাড়ে এটা দেখতে হবে। পিডিদের (প্রকল্প পরিচালকদের) দক্ষতা কম, ফলে প্রকল্পের সময় বাড়ে। আমরা পিডিদের দক্ষতা বাড়াতে একটা বিশেষজ্ঞ প্যানেল তৈরি করবো। প্রকল্প পরিচালক যত দক্ষ হবেন, ততই প্রকল্প বাস্তবায়ন বাড়বে। প্রকল্পে বিলম্ব করা যাবে না, যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা হবে। জিওবি খরচ বেশি করবো, এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে, সেইসব বিভাগে কী ধরনের প্রকল্প নিতে হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আজকের সভায় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়েছে এ কথা জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিদেশিরা প্রকল্প দিচ্ছে তাদের স্বার্থে। পেমেন্ট না দিলে প্রকল্প বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিলে, মুখে আঙুল দিয়ে বসে থাকবে না সরকার।
দীর্ঘ ৮ বছর পর এনইসি সম্মেলন কক্ষে তিন ঘণ্টার মতো বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৫ সালে দ্বিতীয় বৈঠক হয়েছিল বলেও জানান জানান পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সভা শেষে ব্রিফিং করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম। ৪টি বিভাগের কর্মকর্তারা প্রকল্পের বিষয়ে জানানো হয়েছে। বিদেশি ঋণ যেন সঠিকভাবে কার্যকর করা যায়, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। মনিটরিংয়ের জন্য একটি কমিটি করার কথা বলেছেন। আবার কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প পরিহার করার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
সচিব আরও বলেন, সরকারি বিনিয়োগ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আগে সাড়ে ৫ শতাংশ ছিল ২০২২-২৩ এ, এখন ৭.৬% সরকারি বিনিয়োগ হয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে প্রকল্পে বেশি ব্যয় করা হবে। চলমান প্রকল্পের কাজ চলবে। বিদেশি অর্থ নির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে করতে মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুইমাস পর পর আপডেট জানাবেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:০৭:২২ ৭১ বার পঠিত