নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে ৪২ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় দুদকের মামলায় ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কর্মরত সার্ভেয়ার কাওসার আহমেদ গ্রেফতার হয়েছিলেন। এবার এডিসি (রাজস্ব) এইচ এম সালাউদ্দীন মনজুকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা অন সার্ভিস ডিউটি) করা হয়েছে।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা অন সার্ভিস ডিউটি) এর আদেশ জারি হয়।
তবে ওএসডির কারণ জানেন না জেলা প্রশাসকের দাবি, মন্ত্রণালয়ের রুটিন কাজ হিসেবে এটি হতে পারে।
এদিকে ওএসডির আদেশে বলা হয়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এইচ এম সালাউদ্দীন মনজুকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে সংযুক্ত করা হয়েছে।
৩১তম বিসিএস ব্যাচের এই কর্মকর্তা গত ২০২২ সালের ৫ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনে যোগদান করেন।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে সার্ভেয়ার কাওসার আহমেদকে ৪২ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের একটি মামলায় গ্রেফতার করে দুদকের একটি টিম। মামলার অপর আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সাবেক আউটসোর্সিং কর্মচারী জাহিদুল ইসলাম সুমন এখন পর্যন্ত পলাতক রয়েছেন।
দুদক সূত্র জানায়, গত ১০ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সাবেক আউটসোর্সিং কর্মচারী জাহিদুল ইসলাম সুমন একটি কার্টনসহ নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে আটক হন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই কার্টন খুলে নগদ ৪২ লাখ টাকা পাওয়া যায়। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে টাকাগুলো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কোষাগারে জমা রাখা হয়।
জব্দ করা ৪২ লাখ টাকার সঙ্গে দুর্নীতির সম্পৃক্ততা আছে ধারণা করে গত ১৪ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দেন। পরে ১৬ জানুয়ারি দুদক তাদের জেলা কার্যালয়ে মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও দন্ডবিধির কয়েকটি ধারায় একটি মামলা করে।
ওই মামলায় জাহিদুল ইসলাম সুমন ও কাওসার আহমেদকে আসামি করা হয়। পরবর্তীতে কাওসারকে গ্রেফতার ও জাহিদুল ইসলাম সুমন পলাতক রয়েছে বলে জানায় দুদক।
এদিকে ওএসডির সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, ‘এডিসিকে ওএসডি করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সেই আদেশ পেয়েছি। তবে ৪২ লাখ টাকার বিষয় আর ওএসডির বিষয় এক নয়। মন্ত্রণালয় থেকে যে কোনো কর্মকর্তাকে যে কোনো সময় রদবদল করা হয়। এটা সরকারের মন্ত্রণালয়ের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।’
তাহলে সালাউদ্দীন মনজুকে কী কারণে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা অন সার্ভিস ডিউটি) করা হয়েছে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক সময় সংবাদকে বলেন, ‘আমি শুধু ওএসডির আদেশ পেয়েছি। কিন্তু কেন ওএসডি করা হয়েছে সেটা বলা হয়নি।’
এদিকে, ৪২ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রানা নামে জনৈক এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও মামলায় তাকে আসামি করা হয়নি বলে জানা গেছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনাও চলছে।
তবে জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, রানা নামে ওই ব্যক্তি জেলার একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৫০:৩৪ ২১৬ বার পঠিত