প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি তিন দিনব্যাপী ৬০তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার জার্মানির উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সের সভাপতি রাষ্ট্রদূত ড. ক্রিস্টোফ হিউজেনের আমন্ত্রণে এ সম্মেলনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অন্তত সাত দেশ ও তিন আন্তুর্জাতিক সংস্থার শীর্ষনেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আজ বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অডিটোরিয়ামে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তানীতি বিষয়ক এ বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর জার্মানি সফর প্রাক্কালে পর্দা উন্মোচন সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মন্ত্রী জানান, মিউনিখ সম্মেলনে প্রায় ৬০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থা, মিডিয়া, সুশীল সমাজ, সরকারি এবং বেসরকারি খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রায় পাঁচশত প্রতিনিধি থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের উদ্বোধনী আয়োজনে এবং ক্লাইমেট ফিন্যান্স সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন। জার্মান প্রবাসী বাংলাদেশীদের আয়োজিত একটি নাগরিক সংবর্ধনায়ও উপস্থিত হবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তার সফরসঙ্গী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণসহ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ৪ দিনের সরকারি সফরে যাত্রা করে সে দিন সন্ধ্যায় মিউনিখ পৌঁছাবেন। সফর শেষে প্রধানমন্ত্রীর ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার উদ্দেশ্যে মিউনিখ ত্যাগ করে ১৯ ফেব্রুয়ারি পৌঁছার কথা রয়েছে।
হাছান মাহমুদ জানান, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রাটা, ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেতে ফ্রেডেরিকসেন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদোমায়ার জেলেনস্কির সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। পাশাপাশি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কও, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জার্মানির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী ভেনজা শুলজ, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ এবং মেটা’র গ্লোবাল এফেয়ার্স প্রেসিডেন্ট স্যার নিক ক্লেগ প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
সংলাপের মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি আনয়নের মূলমন্ত্র নিয়ে বিগত ১৯৬৩ সাল থেকে জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত হয়ে আসা এ সম্মেলনের ২০১৭ ও ২০১৯ সালের আসরে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জার্মানি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ। সেইসাথে একক দেশ হিসেবে জার্মানি বিশ্বে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং ইউরোপে সর্ববৃহৎ রপ্তানি বাজার। এছাড়াও তারা বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী। রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবেলায় জার্মানি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এবং মানবিক সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে। এমতাবস্থায়, এ আয়োজনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি জার্মান নেতৃবৃন্দের সাথেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন জার্মানি সফর অত্যন্ত সফল ও ফলপ্রসু হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. হাছান।
উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সম্মেলনের ক্লাইমেট সিকিউরিটি সংক্রান্ত প্যানেল এবং পররাষ্ট্র সচিব পিস অপারেশনস বিষয়ক আরেকটি প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৩১:৩১ ৭৬ বার পঠিত