ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে নিয়োগের আগে এবং পরে ইংল্যান্ডের টেস্টের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। ম্যাককালাম আসার আগে ১৭ টেস্টে যেখানে ইংলিশদের পরাজয় ছিল ১১ ম্যাচে। ম্যাককালাম আসার পর সেই পরিসংখ্যান হলো এমন ২১ ম্যাচের মধ্যে ১৪টিতে জয়। ভারতে ইংল্যান্ড এসেছিল নতুন ঘরানার বাজবলের ওপর পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে। কিন্তু উপমহাদেশের মাঠেই যেন খেই হারাল ইংলিশরা।
বাজবল ক্রিকেটে কখনো সিরিজ না হারা ইংল্যান্ড ধরাশায়ী হল ভারতের মাঠে। রাঁচি টেস্টে ৫ উইকেটের হারে নিশ্চিত হয়েছে তাদের সিরিজ হার। ম্যাককালামের অধীনে ৭ সিরিজ অপরাজিত থাকার রেকর্ড দীর্ঘায়িত হতে দিলেন না শুভমান গিল এবং ধ্রুব জুড়েল।
ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলাতে থাকা ম্যাচে একপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ নিয়েই ফেলছিল ইংলিশরা। তবে সেখান থেকে ৭২ রানের জুটিতে ভারতকে ম্যাচ জেতান গিল এবং ধ্রুব। ১৯২ রানের টার্গেট টপকে যেতে ভারতকে খেলতে হয়েছে চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত। ৩-১ এর লিডে সিরিজ নিশ্চিত করল ভারত।
১৯২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বিনা উইকেটেই ৮৪ রান তুলে ফেলেছিল স্বাগতিকরা। এরপরেই শোয়েব বশির এবং টম হার্টলিরা ছড়ি ঘোরাতে শুরু করে ভারতের ওপর। পরের ৩৬ রান করতেই তারা হারিয়েছে ৫ উইকেট। শুরুটা জয়সওয়ালকে দিয়ে। জো রুটের বলে অ্যান্ডারসনের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। এরপরেই ৫৫ রান করা রোহিত শর্মাকে ফিরিয়েছেন হার্টলি।
রজত পতিদার, রবীন্দ্র জাদেজা এবং সরফরাজ খানকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি শোয়েব বশির। ইংল্যান্ড স্বপ্ন দেখতে থাকে জয়ের। কিন্তু সেখানেই প্রতিরোধ গড়েন ধ্রুব জুরেল এবং শুভমন গিল। সময় নিয়ে সিঙ্গেলস আর ডাবলসে খেলেছেন দুজনে। বড় শট খেলার চিন্তা বাদ দেওয়া কাজে লেগেছে ভারতের জন্য। সেট হয়ে বড় শট খেলেছেন, তবে সেটাও বিপদ ডাকতে পারেনি। সহজ জয়ে নিশ্চিত করে মাঠে ছেড়েছেন তারা। গিল অপরাজিত ছিলেন ৫২ রানে। আর ৩৯ রান এসেছে জুড়েলের ব্যাট থেকে।
চতুর্থ দিনের মতোই রঙ বদলেছিল রাঁচি টেস্টের শুরু থেকে শেষ অব্দি। এই সিরিজে রান করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন জো রুট। চতুর্থ টেস্টে সবার ব্যর্থতার দিনে তিনিই করেছিলেন সেঞ্চুরি। বাকিদের কাছ থেকে যোগ্য সঙ্গ না পেলেও তার ১২২ রান দলকে নিয়ে গিয়েছে ৩৫৩ পর্যন্ত।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শোয়েব বশিরের ফাইফারে বিপর্যস্ত ছিল ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ। ১৭৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বড় বিপদের শঙ্কায় ছিল স্বাগতিকরা। সেখান থেকে দলের ত্রাতা হয়েছিলেন ধ্রুব জুড়েল। ৯০ রানের ইনিংসটায় ভর করে দলীয় স্কোর ৩০০ ছাড়াতে সাহায্য করেছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
লিড নিলেও সেটা অবশ্য দ্বিতীয় ইনিংসে উপভোগ করতে পারেননি ইংলিশ ব্যাটাররা। জ্যাক ক্রলির ব্যাট থেকে ৬০ রানের ইনিংস ছাড়া আর কেউই বলার মত স্কোর করতে পারেননি। কুলদীপ যাদব আর রবিচন্দ্রন অশ্বিনের কল্যাণে ১৪৫ রানেই শেষ হয় ইংলিশদের ইনিংস। ১৯২ রানের টার্গেট পায় ভারত। যেটা তারা টপকেছে গিল আর রোহিতের ফিফটিতে ভর করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:০০:১৯ ৮৬ বার পঠিত