ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ ও ২৩ নাবিককে সব প্রক্রিয়া শেষ করে উদ্ধার করতে প্রায় এক থেকে চারমাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
সাবেক মেরিনার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ জিয়াউল হক নিজের এক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে এ বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, সব প্রক্রিয়া শেষ করে নাবিকদের ছাড়া পেতে এক থেকে চারমাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। কেননা, মুক্তিপণ দাবির পর তা নিয়ে দর-কষাকষিসহ নানা প্রক্রিয়া রয়েছে। এর আগে ২০১০ সালে এই কবির গ্রুপেরই জাহাজ জাহান মণি মুক্তি পেতে লেগেছিল ১০০ দিন।
তিনি আরও বলেন, সাধারণত নিজেদের সমুদ্রসীমায় ছোট ছোট স্পিডবোটে ব্যবহার করে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় জলদস্যুরা। তবে আব্দুল্লাহর ক্ষেত্রে ঘটেছে ব্যতিক্রম। দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে আন্তর্জাতিক জলসীমায় এসে ছিনতাই করে এই জাহাজটিকে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফির্সাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, নানা প্রক্রিয়া শেষ করে সব নাবিকসহ জাহাজটিকে মুক্ত করতে বেশ সময় লাগতে পারে। এ ক্ষেত্রে কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি সমঝোতাই মুক্তির মূল উপায়।
সাবেক মেরিনারদের মতে, মুক্তিপণ পাওয়ার সম্ভাবনা দেখলে কোনো নাবিকেরই ক্ষতি করে না জলদস্যুরা। তাই, এমভি আবদুল্লাহর ক্ষেত্রেও যেহেতু মালিক প্রতিষ্ঠান সব কিছু করতে আগ্রহী, তাই ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি ছাড়িয়ে আনার ব্যাপারে আশাবাদী তারা।
এর আগে, ভারত মহাসাগরে এমভি আবদুল্লাহ নামের বাংলাদেশি জাহাজটি মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে। ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে সোমালিয়ার জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর জাহাজে থাকা ২৩ বাংলাদেশি নাবিককে জিম্মি করে।
জানা গেছে, নাবিকদের ছাড়তে ‘৫০ লাখ’ মার্কিন ডলার চেয়েছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। মুক্তিপণ না পেলে বাংলাদেশি নাবিকদের মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
জাহাজটি প্রধান কর্মকর্তা (চিফ অফিসার) মো. আতিক উল্লাহ খান তার স্ত্রীকে পাঠানো সর্বশেষ এক অডিও বার্তায় বলেন, আমাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। টাকা না দিলে তারা একে একে আমাদের সবাইকে মেরে ফেলবে। তাদের যত তাড়াতাড়ি টাকা দেবে, তত তাড়াতাড়ি ছাড়বে বলেছে। এই বার্তাটা সবদিকে পৌঁছে দিও।
দেশের শীর্ষ শিল্প গ্রুপ কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। ২০১৬ সালে তৈরি জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্ত ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। প্রথমে জাহাজটির নাম ছিল ‘গোল্ডেন হক’। পরে বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের বহরে যুক্ত হওয়ার পর এর নাম হয় ‘এমভি আবদুল্লাহ’। এটি একটি বাল্ক কেরিয়ার।
বাংলাদেশ সময়: ১২:৩৪:৪৭ ৮১ বার পঠিত