রমজান মাসে সন্ধ্যায় ইফতার ও তারাবির নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে মুসল্লিরা যখন ব্যস্ত ঠিক তখন ফরিদপুরের সালথায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় গ্রুপের অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।
রবিবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উপজেলার রামকান্তুপুর ইউনিয়নের মদনদিয়া এলাকায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রামকান্তুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. ইশারত হোসেনের সঙ্গে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ইমারত হোসেনের বিরোধ চলে আসছিল।
ইশারত ও পিকুল আপন মামাতো-ফুফাতো ভাই। তারা দুজন গত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
নির্বাচনে ইশারত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে তাদের বিরোধ আরো তীব্র হয়। এই বিরোধের জেরে ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই দিন আগে পিকুলের সমর্থক ফজলু মাতবরের সঙ্গে ইশারতের সমর্থক ওমর মোল্যার কথা কাটাকাটি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি নিয়ে কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় উত্তেজনা চলছিল।
একপর্যায়ে রবিবার সন্ধ্যায় ইফতারের পর উভয় গ্রুপের কয়েক শ সমর্থক দেশীয় অস্ত্র ঢাল, কাতরা, ভেলা, টেঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উভয় গ্রুপের দফায় দফায় চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় পুরো এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় গ্রুপের অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে প্রাথমিকভাবে আহতদের নাম পাওয়া সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে সংঘর্ষের সময় হামলা চালিয়ে পিকুল, মিরাজ, ফজলু, বাশার মাস্টার, ওমর মোল্যা ও ইসমাইলের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। অগ্নিসংযোগ করা হয় একটি পাটকাঠির গাদায়ও।
রবিবার রাত ১১টার দিকে সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল কালের কণ্ঠকে বলেন, খবর পেয়ে ওসিসহ সঙ্গীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের ১১ রাউন্ড ফাঁকা ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে ৬টি টেঁটা, ১০টি কাতরা, ১১টি বাঁশের লাঠি, ৫টি ঢাল ও ১টি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় এক গ্রুপের নেতা পিকুল মোল্যাসহ ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান ইশারত হোসেনসহ সংঘর্ষে জড়িত অন্যদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৫৯:০০ ৯০ বার পঠিত