প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বড় আকারের আন্তর্জাতিক তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি রাজধানীর একটি হোটেলে সফররত ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত এবং সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে এক বৈঠকে এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচরাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক তহবিলের হ্রাস পাওয়ার প্রবণতার প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের সহায়তায় যাতে আরও বড় পরিমাণ তহবিল আসে সে প্রচেষ্টা জোরদার করার জন্য ইউএনডিপির প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে ভাষানচরে তাদের জন্য উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।
তিনি আরো বলেন, ভাষানচরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারে।
ভাষানচরে আরও রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করতে ইউএনডিপির সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিশেষত অর্থনৈতিক অঞ্চলে বৃহত্তর বিনিয়োগের জন্য সুইডিশ ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কার্বন নির্গমনে বাংলাদেশের অবদান নগণ্য হলেও দেশটি মারাত্মকভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
তিনি বলেন জলবায়ূ পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়ে থাকে।
স্থানীয় জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও এবং তাদের জীবিকা রক্ষায় বাংলাদেশ একটি জলবায়ু ট্রাস্ট গঠন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন করা। এর ফলে ইতোমধ্যে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮.৭ শতাংশে এবং চরম দারিদ্যের হার ২৫.১ শতাংশ থেকে ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে যাতে কোন মানুষ গৃহহীন না থাকে সে লক্ষ্যে সরকার বিনামূল্যে সারা দেশে গৃহহীনদের ঘূর্ণিঝড় সহিষ্ণু ঘর বানিয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার দেশের উপকূলীয় এলাকায় সাইক্লোন সেন্টার নির্মান করেছে।
শেখ হাসিনা ১৯৬৯ সালে তাঁর প্রথম সুইডেন সফরের কথা উল্লেখ করেন যখন তাঁর স্বামী পড়াশোনা করতে সেখানে অবস্থান করছিলেন।
সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া বলেন, সুইডেন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো গভীর করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে।
তিনি দুই দেশের মধ্যে বিশেষ করে বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করার ব্যাপারে তার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চার দিনের সফরে ভিক্টোরিয়া আজ সোমবার ঢাকায় পৌঁছেছেন।
তিনি কক্সবাজার ও ভাষানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৩:৫১ ৮০ বার পঠিত