শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০২৪

চোরাই চিনিতে সয়লাব বাজার, লোকসানে মিল মালিকরা

প্রথম পাতা » অর্থনীতি » চোরাই চিনিতে সয়লাব বাজার, লোকসানে মিল মালিকরা
শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০২৪



চোরাই চিনিতে সয়লাব বাজার, লোকসানে মিল মালিকরা

ভারত থেকে চোরাই পথে আসা চিনিতে সয়লাব দেশের বাজার। বর্তমানে চাহিদার প্রায় ২৫ ভাগই মিটছে ভারত থেকে অবৈধপথে আসা চিনিতে। মিল মালিকরা এমন দাবি করলেও ভয়াবহ তথ্য দিচ্ছেন কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, তাদের বিক্রি করা চিনির ৭৫ থেকে ৯৯ ভাগই যোগান দিচ্ছে চোরাকারবারীরা। এ ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থাগুলোর নিরবতা বাজারকে আরও বিপর্যয়ে ফেলবে বলে আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের।

সস্প্রতি বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসআরএ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশের বাজারের বর্তমান চাহিদার প্রায় ২৫ ভাগ মিটছে ভারত থেকে অবৈধপথে আসা নিম্নমানের চিনিতে। যার কারণে বছরে ৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

এ অবস্থায় বাজারের বাস্তব চিত্র দেখতে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ যেন ওপেন সিক্রেট। অবৈধপথে আসা ভারতীয় চিনিতেই চলছে দেশের বাজার। দামও পড়ছে বেশ কম।

বিক্রেতারা বলেন, ভারতীয় চিনির চেয়ে দেশী চিনির দাম ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত বেশি। তাই ক্রেতারা ঝুঁকছেন ভারতীয় চিনির দিকেই।

সীমান্ত পার হয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে কীভাবে পৌঁছে যাচ্ছে চোরাই চিনি? এমন প্রশ্নের উত্তরে জানা গেল, চোরাকারবারিরা দায়িত্ব নিয়ে পৌঁছে দিচ্ছে ঘরে ঘরে।

চোরাই চিনির দাপটে বাজার হারিয়েছে দেশে প্রস্তুত করা চিনি। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের একতা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শিব সংকর রায় বলেন, চোরাই পথে আসা ভারতীয় চিনি দেশের বাজারে ৯২-৯৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে দেশীয় চিনি কিনছেন না ভোক্তারা।

মিল মালিকরা বলছেন, চিনি নিয়ে বসে আছেন তারা। অথচ তাদের কাছে আসছেন না ব্যবসায়ীরা। আব্দুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেডের হেড অব সেলস মনিরুজ্জামান বলেন, চোরাই পথে আসা চিনিতে বাজার সয়লাব। এতে লোকসানে দেশীয় মিল মালিকরা। কমে গেছে বেচাকেনা।

চোরাই চিনি বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিলেও নিরব বাজার নিয়ন্ত্রণে চষে বেড়ানো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থা। যা বাজার ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ফেলবে বিপদে, এমন আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের।

অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবির বলেন, অবৈধভাবে পণ্য আমদানি করা কখনোই ভালো নয়। এটি দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

সীমান্ত পাহারায় ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে ভারত থেকে কমমূল্যের চিনি বৈধপথে আমদানির পরামর্শ দিচ্ছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ১২:০৫:২৯   ৮৩ বার পঠিত