সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বিদেশে বসে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বাংলাদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদকে উসকে দেওয়া হয়। অসাম্প্রদায়িক দেশ চাইলে রাজনীতিকে বেছে নিতে হবে। দেশে রাজনীতি ঠিক হলে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।
আজ মঙ্গলবার (১৪ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার ও টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে পলিসি অ্যাডভোকেসি রোডম্যাপ’ শীর্ষক জাতীয় গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থা-জিবিএসএস আয়োজিত আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থার চেয়ারপারসন প্রফেসর সাজেদা বানু। আলোচনায় অংশ নেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়রুল আলম শেখ, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর কেটি ক্রোক, ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তফা আলমগীর রতন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান যুব ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাপস কান্তি পাল, কাপের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সানইয়াত, কজিরবাগ ঋষিপাড়া পঞ্চায়েতের সভাপতি সুজন দাস ও রতন, ঋষি সম্প্রদায়ের অ্যাডভোকেসি ফোরামের সদস্য কনকা দান ও প্রসেনজিৎ দাস, জিবিএসএসের নির্বাহী পরিচালক মাসুদা ফারুক রত্না প্রমুখ।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে কেউ পিছিয়ে পড়ে থাকবে না। আইন, নীতিমালা প্রণয়ন থেকে বাস্তবায়ন সকল পর্যায়ে সকলের অংশগ্রহণ হওয়া জরুরি।
দেশে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ সমান মৌলিক অধিকার নিয়ে বসবাস করতে পারে সেই লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। কোনো নীতিমালা সংবিধানের ওপরে নয়। নীতিমালায় থাকুক না থাকুক সেটা বিষয় নয়। এই রাষ্ট্রে সবাই সমান অধিকার পাবে।
সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে বেড়ানো দলকে দেশ থেকে তাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
ঋষি সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রত্যাশা অনুযায়ী যথাযথ জায়গায় পৌঁছতে পারেনি মন্তব্য করে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িকতা, সাম্য ও সমতার ভিত্তিতে এই দেশ সৃষ্টি হয়েছে। সংবিধান আমাদের সমান অধিকার দিলেও স্বাধীনতার পর একটা লম্বা সময় দেশের ক্ষমতায় ছিল, যারা স্বাধীনতা ও সংবিধানে বিশ্বাস করে না। সেই কারণে আমাদের যতটা এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল সেটা হয়নি। তবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সরকার কাউকে পেছনে ফেলে নয়, সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার, উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
এই কাজে বেসরকারি সংগঠনগুলোকেও রাজনৈতিক সচেতনতা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সভায় সচিব মো. খায়রুল আলম শেখ বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হিসেবে ঋষি সম্প্রদায়ের মানুষদের বিশেষ সহযোগিতা দিয়ে এগিয়ে নেওয়া দরকার। ঋষি সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা চাইলে ট্যানারি শিল্প কিংবা জুতা কারখানায় নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা অনুসারে অগ্রাধিকার বা সুযোগ করে দিতে হবে। এ ছাড়া বিশেষ পেশায় যারা আছেন তাদের উৎপাদিত বিশেষায়িত পণ্য উচ্চমূল্যে দেশে-বিদেশে বিক্রি হতে পারে।’
কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর কেটি ক্রোক গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করা অঙ্গীকার গ্রহণ করায় অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছেন, তারা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করবেন বলে আশা করি। নিশ্চয়ই ঋষি সম্প্রদায়ের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে।’
সভায় ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার ও টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে পাঁচ দফা পলিসি অ্যাভোকেসি রোডম্যাপ সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। সুপারিশে ঋষি সম্প্রদায়ের মৌলিক অধিকার রক্ষায় নীতিমালা সংশোধন ও একটি সংসদীয় ককাসের গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া বিগত মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত বৈষম্যবিরোধী আইন দ্রুত প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩৮:৩৪ ৭১ বার পঠিত